বিচার করা মানে প্রতিশোধ নেওয়া নয়, এনকাউন্টার নিয়ে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির

শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মারা গিয়েছে তরুণী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের চার অভিযুক্ত। তার পরদিন ভারতের প্রধান বিচারপতি কার্যত নিন্দা করলেন ওই ঘটনার। তিনি শনিবার বলেন, কেউ যেন না ভাবেন যে, কারও বিচার করা মানে তার ওপরে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা।

প্রধান বিচারপতি বিবৃতি দিয়ে বলেন, “বিচার মানে প্রতিশোধ নেওয়া নয়। বিচার যদি প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তা আর বিচার থাকে না।”

গত সপ্তাহের বুধবার  রাত ৯টা ২০ নাগাদ, হায়দরাবাদে এনএইচ ৪৪-এর ওপর পেশায় পশুচিকিৎসক তরুণীর স্কুটির চাকা পাংচার করে দিয়েছিল অভিযুক্তরা। তার পরের এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারে তারা।

ধরা পড়ার পরে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে, তরুণী যাতে চিৎকার না করতে পারেন, সে জন্য তাঁর গলায় জোর করে মদ ঢেলে দিয়েছিল তারা। এমনকি তরুণীকে পোড়াতেও তাঁরই স্কুটির পেট্রোল ঢালা হয়েছিল বলেও স্বীকার করেছে তারা।

এই ঘটনায় তদন্তে নেমে, দু’দিন পরে, শুক্রবার চার জন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু নামের এই চার অভিযুক্তকে শনিবার ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছিলেন তেলঙ্গানার শাদনগরের ম্যাজিস্ট্রেট। তেলঙ্গানার চেরাপল্লীর সেন্ট্রাল জেলে ছিল তারা। ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে তাদের বিচার হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

সারা দেশের মানুষ ফেটে পড়েছিল ক্ষোভে, প্রতিবাদে। দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়ে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি তুলেছিলেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে দাবি করেছিলেন গণহত্যার। এ সবের মধ্যেই শুক্রবার  কাকভোরে খবর এল এনকাউন্টারের। পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় নিহত চার ধর্ষকই।

নির্যাতিতা ও নিহত তরুণীর বাবা জানিয়েছেন, ঘটনায় শান্তি পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “দশ দিন হয়ে গেল আমার মেয়েটা চলে গেছে। তার পরে শাস্তি হল ওর অপরাধীদের। সরকার ও পুলিশের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এবার নিশ্চয় শান্তি পাবে আমার মেয়েটা।”

প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নির্ভয়া-কাণ্ডে নিহত তরুণীর আশা দেবীও। তাঁর কথায়, “আমি খুব খুশি এই শাস্তির কথা শুনে। এই ক’দিন এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসতে পারিনি আমি। আজ শান্তি পেলাম। খুব ভাল কাজ করেছে পুলিশ। যিনি এনকাউন্টার করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেন কোনও পদক্ষেপ না করা হয়। আমার মেয়েটার খুনিরাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাজা পাক।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.