কোলন ক্যান্সার শণাক্তকরণে আরো এক ধাপ এগোল ভারতীয় গবেষকরা

কোলন ক্যান্সার শণাক্তকরণে আরো এক ধাপ এগোল ভারতীয় গবেষকরা

কোলন ক্যান্সার ক্যান্সারের প্রকারভেদের মধ্যে সবথেকে সাধারণ অর্থাৎ কমন ভারতে এবং বিশ্বব্যাপী। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (ICMR) মতে, এটি পুরুষদের মধ্যে তৃতীয় সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার (২০১৪ সালে ৬৬৩,০০০ কেস, ) এবং মহিলাদের মধ্যে দ্বিতীয় সবচেয়ে সাধারণ (২০১৪ সালে ৫৭১,০০০কেস)।এটা এমন এক ধরনের ক্যান্সার যা দেহের বৃহদন্ত্রের অংশে অনিয়ন্ত্রিত কোষবৃদ্ধির কারণে সৃষ্টি হয়। বর্তমানে, কোলন ক্যান্সার খুব শেষ পর্যায়ে ধরা পড়ে। এটি শনাক্ত করার দুটি কৌশল রয়েছে: সিটি কলোনোগ্রাফি এবং কোলোনোস্কোপি বা ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি। যদিও সিটি কলোনোগ্রাফিতে কম রেডিয়েশনের প্রয়োজন হয় , কোলোনোস্কোপি একটি  প্রক্রিয়া যেখানে ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি এর সাহায্য নেওয়া হয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজিতে (এনআইআই) ডঃ সাগর সেনগুপ্তের নেতৃত্বে ভারতের চারটি এবং ফ্রান্সের একটি ইনস্টিটিউটের  সহযোগিতামূলক গবেষণায় প্রথম পর্যায়ে কোলন ক্যান্সার  রোগ শনাক্ত করার একটি নতুন উপায় আবিষ্কার করা হয়েছে।ডঃ সেনগুপ্তের ল্যাবরেটরিতে  মাইক্রো আরএনএ-এর ওপর গবেষণা করা হচ্ছিল , যা ছোট  নন-কোডিং আরএনএ অণু, অনেক প্রোটিনের অভিব্যক্তি প্রকাশ  করে। মাইক্রো আরএনএগুলি মেসেঞ্জার আরএনএ অণুগুলির সাথে যুক্ত থাকে , যা প্রোটিন কে কোড করে এবং এর ফলে তারা নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংস হতে পারে।নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হয়েছে যে ছয়টি মাইক্রো আরএনএ কোলন ক্যান্সার কোষে বৃদ্ধি পায়  এবং এর মাত্রা সিডিএক্স 2 নামে একটি মাস্টার রেগুলেটর প্রোটিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।গুরুত্বপূর্ণভাবে, ‘ডিএনএ ড্যামেজ সেনসিটিভ মাইক্রো আরএনএ’স বা’ ডিডিএসএম’ -একটি আপগ্রেটেড মাইক্রো আরএনএ, শরীরের প্রতিটি কোষে জিনগত উপাদানের আদি প্রকৃতি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সেলুলার প্রোটিনের একটি গ্রুপকে টার্গেট করে। পরীক্ষাগারে ইঁদুরের ওপর করা পরীক্ষাগুলি নিশ্চিত করে যে এই মাইক্রো আরএনএগুলির অত্যধিক এক্সপ্রেশনের ফলে  জিনোম স্টেবিলাইজারের কোনো অংশে ড্যামেজ  হলে কোষগুলিতে ক্যান্সার গঠনের প্রবণতা বেশি থাকে।গবেষকরা দ্য ক্যান্সার জিনোম অ্যাটলাস (টিসিজিএ) ডাটাবেসে এর ফলাফল পর্যবেক্ষণ করেন ।কোলন ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে যারা তাদের চিকিৎসার জন্য নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস) এ এসেছিলেন তাদের  পরীক্ষা করা হয়েছিল । ৪১০ এরও বেশি রোগীর উপলব্ধ তথ্য এবং ৫৪ জন রোগীর বায়োপসি  দিয়ে নয়াদিল্লি থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। তাঁরা দেখতে পান, যে DDSM গুলি প্রথম স্তরের কোলন ক্যান্সারের টিস্যুতেও নিয়ন্ত্রিত। চূড়ান্ত পর্যায়ে চতুর্থ কোলন ক্যান্সার পর্যন্ত আপগ্রেডেশন করা গেছিল। আরও গুরুত্বপূর্ণ, ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ডিডিএসএমগুলির ক্রমবর্ধমান রেট তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা হ্রাস করে।এনআইআই এবং এইমস, নয়াদিল্লি ছাড়াও, রিজিওনাল  বায়োটেকনোলজি, ফরিদাবাদ, সেন্ট জনস রিসার্চ হাসপাতাল, বেঙ্গালুরু এবং ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণায় অবদান রেখেছে। জার্নাল অফ সেল সায়েন্সে কাজটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.