আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গীর প্রতিফলন এই বিশ্ব-ভারতী। সোমবার শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দীক্ষান্ত ভাষনে একথা বলেন বিশ্বভারতী পরিদর্শক তথা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গীর প্রতিফলন এই বিশ্ব-ভারতী। তিনি এই জায়গাটিকে ধারণার আতুরঘর হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন। ভারতীয় ঐতিহ্যকে বজায় রেখেই সারা বিশ্বের সাংস্কৃতিক ধ্যানধারণাকে এই স্থান স্বাগত জানিয়েছিল। বিশ্ব-ভারতীর অনন্যতা আমাদের কাছে পুরস্কার-স্বরূপ এবং সারা বিশ্বের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য আমরা গর্বিত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই জায়গায় তাঁর ভাবনাকে রূপ দেওয়ার জন্য কাজ করে গেছেন। বিশ্ব-ভারতীর প্রাক্তনীরা বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ইন্দিরা গান্ধী, সত্যজিৎ রায় থেকে অমর্ত্য সেন এরা এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতার স্বপ্নকেই শুধু বাস্তবায়িত করেননি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাধীন ভারতকে এক অন্যমাত্রায় নিয়ে যেতে এরা নিজেদের অবদান রেখেছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ব-ভারতী যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন তথাকথিত পুঁথিগত শিক্ষাদানের মরুভূমিতে, যেখানে শিক্ষার্থীদের যন্ত্রমানব তৈরি করা হ’ত, তার মধ্যে এই জায়গাটি ছিল একটি মরুদ্যান-স্বরূপ। এই মরুদ্যানে রবীন্দ্রনাথ আমাদের অন্তরাত্মার চাহিদাকে পূরণ করার শিক্ষা দিয়েছিলেন। এই লক্ষ্যে তিনি অনুভব করেছিলেন, দর্শন, সাহিত্য বা ইতিহাসের মতো বিষয় ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেই চলবে না, সঙ্গীত, অঙ্কন ও চারুকলার মধ্য দিয়ে তাদের অন্তরাত্মাকে জাগ্রত করে তুলতে হবে। চাহিদা অনুযায়ী এখানে কৃষিবিদ্যা পড়ানোরও ব্যবস্থা ছিল। আর তাই শান্তির এই নিকেতন, শান্তিনিকেতনের পাশাপাশি, তিনি গ্রামীণ এলাকার পুনর্গঠন ও গ্রামোন্নয়নের জন্য শ্রীনিকেতনেও একটি কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন, যার মাধ্যমে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে।