বিশ্ব ব্যাঙ্কের নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন ডেভিড ম্যালপাস। তিনি আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ট্রেজারি অফিসার। শুক্রবার সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত করা হয়। বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে, স্বচ্ছ পদ্ধতিতে ডেভিড ম্যালপাস চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত হয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ব ব্যাঙ্কের যে কোনও সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিই চেয়ারম্যান হতে পারেন। কিন্তু ওই ব্যাঙ্কের জন্মের পর থেকে এখনও পর্যন্ত আমেরিকানরাই তার প্রেসিডেন্ট হয়ে আসছেন। অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ডের সর্বোচ্চ পদে সব সময় কোনও না কোনও ইউরোপীয় নির্বাচিত হন। আগামী সপ্তাহেই বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আইএমএফের যৌথ বৈঠক হবে। তার আগে শুক্রবার বিশ্ব ব্যাঙ্কের নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষিত হওয়া প্রত্যাশিত ছিল।
ওই পদে ম্যালপাস বাদে আর কোনও প্রার্থী ছিলেন না। চলতি বছরের গোড়ার দিকে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁকে মনোনীত করে। তখন অনেকেই আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে বলেছিলেন, বিশ্ব ব্যাঙ্কের দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচি বানচাল করে দেওয়ার জন্যই ম্যালপাসকে প্রেসিডেন্টের পদে বসাতে চাওয়া হচ্ছে।
৬৩ বছরের ম্যালপাস বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কঠোর সমালোচক। তাঁর মতে, ওই সংস্থাগুলি যেভাবে ঋণ দেয়, তাতে কারও উপকার হয় না। তারা বিশেষভাবে চিনের প্রতি খুব উদারতা দেখায়। কিছুদিন আগে অবশ্য তিনি সুর নরম করে বলেন, বিশ্ব ব্যাঙ্ক যেভাবে চরম দারিদ্র দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে, তা তিনিও সমর্থন করেন। কিন্তু গত বছর বিশ্ব ব্যাঙ্কে যে সংস্কার করা হয়েছিল, তার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক বা আইএমএফের শীর্ষপদে যেভাবে আমেরিকান অথবা ইউরোপীয়রা বরাবর মনোনীত হয়ে আসছেন, সম্প্রতি তাতে আপত্তি জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। তাদের দাবি সংস্থার শীর্ষ কর্তাকে বেছে নিতে হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে। কিন্তু বিশ্ব ব্যাঙ্কের বড় অংশীদাররা কেউ এই দাবিকে সমর্থন করেনি। বিশ্ব ব্যাঙ্ক অবশ্য দাবি করেছে, ওই ধরনের সমালোচনার কথা মাথায় রেখেই শীর্ষপদে নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে আরও খোলামেলা করা হয়েছে।
ম্যালপাসের নির্বাচনের পরে নতুন করে একদফা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাবে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ নিজের দেশেই তিনি জনপ্রিয় নন। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, দুই দলের সদস্যরাই তাঁর সমালোচনা করেন। গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক বিষয়গুলি সামলাতে তিনি কতদূর দক্ষ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে একাধিকবার।