পাকিস্তান সেনেটের গোপন প্রতিবেদন ভারতে দাঙ্গা লাগানোর চক্রান্ত ফাঁস হলো। এই প্রতিবেদনটি ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে লেখা হয়। এই প্রতিবেদনে দাঙ্গা লাগানোর চক্রান্তের কথা রয়েছে। রয়েছে আরএসএস-হিন্দুত্ব নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানোর কথা। আন্তর্জাতিক স্তরে কাশ্মীর নিয়ে প্রোপাগান্ডা চালানোর কথাও রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহম্মদ আসিফ ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষাসচিব সরতাজ আজিজের স্বাক্ষরিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বিশেষ ভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর আরএসএস আদর্শকে টার্গেট করতে হবে।
এই প্রতিবেদনে পাক-সরকারকে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য সচেষ্ট হতে বলা হয়েছে। এর একটি বিশেষ রূপ নিচের ঘটনায় দেখা যায়। কিছুদিন আগেই দ্য কুইন্ট সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে বন্দী ভারতীয় কুলভূষণ যাদবকে গুপ্তচর প্রমাণের চেষ্টা করে পাকিস্তান সরকার। পাক সরকারে কুইন্টে প্রকাশিত সংবাদকে উদ্ধৃত করে টুইট করে। ভারতের তিন সাংবাদিক চন্দন নন্দী, করণ থাপার, প্রবীণ স্বামী এই পাক চক্রান্তের অংশীদার। এতে ভারতের যে নাগরিকেরা মোদী সরকারের উপরে ক্ষুব্ধ, বিশেষ করে মোদী সরকারের পাক-নীতির বিরোধী, সেই সমস্ত রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, বেসরকারি সংস্থা প্রভৃতির কাছে পৌঁছনোর কথাও বলা হয়েছে। ভারতের জাতি-ধর্ম ভিত্তিক বৈচিত্র্যকে ব্যবহার করে দাঙ্গা লাগানোর কথাও বলা হয়েছে। ভারতের মুসলমান, খ্রিস্টান, শিখ, দলিত প্রভৃতিদের এই দেশবিরোধী চক্রান্তে অংশীদার করতে হবে। কিছুদিন আগেই ঘটা ভীমা কোরেগাঁওয়ের দাঙ্গা ও দাদরির আখলাখ-কাণ্ড পাকিস্তানের এই চক্রান্তকেই তুলে ধরে।
ভারতের কুখ্যাত বিচ্ছিন্নতাবাদী উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, জিগনেশ মেবানি প্রমুখরা প্রকৃতপক্ষে এই চক্রান্তেরই অংশীদার। ভারতের সমস্ত বিরোধী শক্তি মোদীর অকারণ বিরোধিতা করে এই চক্রান্তকেই শক্তিশালী করছেন। এক অনুষ্ঠানে দিগ্বিজয় সিং জাকির নায়েকের সঙ্গে কোলাকুলি করছেন, তো তিনিই আবার ২০০৮-এর মুম্বাইয়ে পাকিস্তানী হানার নেপথ্য নায়ক হাফিজ সঈদকে ‘সাব’ বলে সম্বোধন করছেন। আবার ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী ২০০১-এ ভারতের গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদ ভবনে হানায় অভিযুক্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আফজল গুরুকে সম্মানসদচক ‘জি’ সম্বোধন করছেন।
এই প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক স্তরে লবিস্ট নিয়োগ করে পাক সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের মনোভাব পরিবর্তনের চেষ্টা করার কথাও বলা হয়েছে। বলা হয়েছে যে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করতে হবে, এবং সেই সম্মেলনকে যে কোনো ভাবে সাফল্যমণ্ডিত করতে হবে।
ভারতের বালুচিস্তান-নীতিকে বাধা দেওয়ার কথাও উল্লেখিত হয়েছে এই পোস্টে।