সরকারি নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ ‘মৌলিক অধিকারে আঘাত’, কেন্দ্রকে নিয়ম জানাতে বলল সুপ্রিম কোর্ট

যে কোনও ঘটনার প্রেক্ষিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা হোক কিংবা বোর্ডের পরীক্ষা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই পন্থা নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও বেশ কিছু দিন ধরে বন্ধ থাকে ইন্টারনেট পরিষেবা। কিন্তু এই সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম বা নীতি আছে কি? একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল প্রদেশ, গুজরাত এবং রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার চলাকালীন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল। এই বিষয়টি তুলে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে একটি সংস্থা। তাদের প্রশ্ন ছিল, হঠাৎ কোনও এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার কোনও নিয়ম বা নীতি কি প্রশাসনের কাছে আছে? দাবি করা হয়, এই সিদ্ধান্ত মৌলিক সুযোগ-সুবিধাকে বাধা দেয়।

সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই চারটি রাজ্যকে নোটিস দেওয়ার পরিবর্তে তারা সরাসরি ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে নোটিশ জারি করবে। এ সংক্রান্ত কোনও নিয়ম আছে কি না, তারাই জানাক। বেঞ্চের সদস্যরা বলেন, ‘‘আমরা শুধুমাত্র মন্ত্রককে একটি নোটিস জারি করছি। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম আছে কি না, তা বোঝা যাবে।’’

মামলাকারীর আইনজীবী সওয়ালের সময় বলেন, “পরীক্ষায় টোকাটুকি বা পরীক্ষার্থীরা যাতে অসৎ পন্থা না নিতে পারেন, তার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে বলে যুক্তি দেয় প্রশাসন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট এলাকার খুচরো কেনাকাটা থেকে শুরু করে সরকারি পরিষেবা, বিভিন্ন মৌলিক সুযোগ-সুবিধা এবং কল্যাণমূলক ব্যবস্থাও অনলাইনে সংযুক্ত রয়েছে।” তাঁর প্রশ্ন, যেখানে সব কিছু ডিজিটাল করা হচ্ছে, সেখানে কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় জ্যামার ইত্যাদি বসিয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা কি মানুষের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ নয়?

এর প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে কেন মামলাকারী হাই কোর্টে গেলেন না? উত্তরে মামলাকারী জানান, রাজস্থান সরকার হাই কোর্টে জানিয়েছে, তারা না কি কখনও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধই করেনি! তাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.