করোনাভাইরাসের প্রাথমিক ধাক্কা কাটানোর পর ইতিমধ্যে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা গিয়েছে। সেই প্রবণতা পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে। আগামী অর্থবর্ষেও অর্থনীতির সেই উত্থান অব্যাহত থাকবে মনে করছে কেন্দ্র। আর্থিক সমীক্ষার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী অর্থবর্ষে ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৮-৮.৫ শতাংশ।
এমনিতে করোনাভাইরাসের লকডাউনের ধাক্কায় ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি সংকুচিত হয়েছিল ৭.৩ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম কয়েক মাস লকডাউন এবং করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে আর্থিক কর্মকাণ্ড কার্যত থমকে গিয়েছিল। তলানিতে ঠেকেছিল চাহিদা। ক্রয়ক্ষমতা ও ভোগব্যয় হ্রাস পেয়েছিল। স্বভাবতই মুখ থুবড়ে পড়েছিল অর্থনীতি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শুরুতেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের অর্থনীতি কিছুটা অক্সিজেন পায়। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যায়। আগের বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষের সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি বেড়েছিল ৮.৪ শতাংশ। যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দ্রুত ছিল। সেই রেশ বজায় রেখে চলতি অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৯.২ শতাংশ হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।
সেই আবহের মধ্যেই সোমবার সংসদে আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী, চলতি বছর (২০২১-২২ অর্থবর্ষ) ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৯.২ শতাংশ। রিপোর্টে দাবি করা হযেছে, করোনাভাইরাস টিকাকরণ, জোগান সংক্রান্ত খাতে সংস্কার, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল, রফতানি বৃদ্ধি, মূলধনী খাতে ব্যয় বৃদ্ধির মতো বিষয়ের সমর্থন পাবে ভারতের অর্থনীতি।
তবে আর্থিক সমীক্ষায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের নতুন কোনও ঢেউ আছড়ে পড়বে না, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কার্যকর হবে না – এমনটা আশা করেই দেওয়া হয়েছে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস। সেইসঙ্গে স্বাভাবিক বর্ষা, বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অবস্থান, বিশ্বব্যাপী জোগান শৃঙ্খলের ঘুরে দাঁড়ানো এবং বিশ্ব বাজারে ব্যারেলপিছু অপরিশোধিত তেলের দাম ৭০-৭৫ ডলারের মধ্যে থাকবে ধরে নিয়ে সেই আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
একটি মহলের আশা, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবারের বাজেটে কর্মসংস্থানের উপর জোর দেওয়া হতে পারে। ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে বড় ছাড় দিতে পারেন সীতারামন। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে ব্যক্তিগত করবিহীন আয়ের সর্বোচ্চসীমা ২.৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হতে পারে। প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে সেই সীমা বেড়ে হতে পারে ৩.৫ লাখ টাকা। বার্ষিক আয়ের সর্বোচ্চসীমাও (১৫ লাখ টাকা) কিছুটা বাড়ানো হতে পারে।