বাংলাদেশে হিন্দু নিগ্রহের খবর আনন্দবাজারে দশের পাতায়। এদের কি বলবেন – নির্বোধ ? শয়তান ? জ্ঞানপাপী ? ধান্দাবাজ ? আপনারাই চিন্তা করুন । আর তারপর কাগজ পড়ার অভ্যাসটা ডিজিটাল যুগে বন্ধ করবেন কি না নিজেই সেই সিদ্ধান্ত নিন ।

খবরটাকে আনন্দবাজার দশের পাতায় নিয়ে গেছে ।
বর্তমান প্রথম পাতায় ৯ লাইন দিয়েছে, লিখেছে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ।
এই সময় প্রথম পাতায় জায়গা দিয়ে লিখেছে হাসিনার কড়া বার্তা ইত্যাদি ।
আর এই সব কটা কাগজের যেটা কমন ফ্যাক্টর সেটা হল খবর প্রাণপন চাপা দেওয়া । কে কিভাবে চাপবে তার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা ।

আগ মার্কা মূর্খগুলো কি জানেনা সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে খবর আজকাল আর চাপা থাকে না । যেমন আজ এই প্রতিবেদন যখন লিখছি তখন ঢাকা থেকে এক অপরিচিতের ফোন পেলাম । বললেন রংপুর এ নিরীহ ৫০/৬০ টি পরিবারের বাড়ি জ্বলছে আপনি জানেন ? বললাম – না জানিনা ।

কিছুক্ষণের মধ্যে সেই দৃশ্য মোবাইলে চলে এল একাধিক সূত্র থেকে । সারা দুনিয়া দেখছে, আমিও দেখলাম (ভিডিও নীচে দিলাম) । প্রশ্ন হচ্ছে এই সংবাদই এই অতি বোদ্ধা সংবাদ মাধ্যম চাপছে । প্রতিদিন নিয়ম করে । ভাবছে আমি দেখলাম না, তাই কেউ আর দেখেনি । আমি ছাপলাম না তাই কেউ আর জানবে না । সেই গর্তে মুখ লুকানো চালাক শিয়ালের গল্প ।

এদের কি বলবেন – নির্বোধ ? শয়তান ?
জ্ঞানপাপী ? ধান্দাবাজ ? আপনারাই চিন্তা করুন । আর তারপর কাগজ পড়ার অভ্যাসটা ডিজিটাল যুগে বন্ধ করবেন কি না নিজেই সেই সিদ্ধান্ত নিন ।

আরেকজনের কথা আজ বলতে বড় ইচ্ছে করছে । ফরহাদ হাকিম । সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন বাংলাদেশ নিয়ে । মুখ বেশ কিছুটা বিকৃত করে বেজার মুখে বললেন বাংলাদেশে এই কাজগুলো ক্রিমিনালরা করেছে ।
বলার ক্ষমতা হল না যে কাজটা ইসলামিক মৌলবাদীরা করেছে । এইটুকু সততা সম্বলে নেই এদের, এরা কলকাতার মহানাগরিক !!

ব্রাত্য বসু আবার একধাপ এগিয়ে । ইনিয়ে, বিনিয়ে যা বললেন তার মধ্যে একটা কথা খুব ইন্টারেস্টিং – ঘটনাটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যপার । তাই মন্তব্য করা উচিত নয় ।

ওদিকে এরাজ্যের বাক্যবাগীশ গুণধর ভাইপো আর তার পিসি সেই যে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তার থেকে আর নড়ছেন না ।

অবস্থাটা সব থেকে করুণ সি পি এমের । পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে বাংলাদেশে হিন্দুদের মৃত্যু নিয়ে কোন ” নিন্দা ” শব্দটির উল্লেখ নেই । শুধু ” গভীর উদ্বেগ ” দিয়ে মান রেখেছেন নিজেদের । দায় শেষ ।

করুণতম অবস্থা বোধহয় এ রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদেরও। একতরফা বাড়ি বসে গালি খাচ্ছেন এঁরা । কৌশিক সেন, জয় গোস্বামী, শীর্ষেন্দু মুখার্জি, সুজাত ভদ্র, নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ীরা কোথায় যে লুকিয়ে আছেন শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেউ আজও জানেন না ।

ঠিক এই অবস্থায় আজ চট্টগ্রাম, কুমিল্লায় দু ‘দুটো দীর্ঘকায় মিছিল বার করল । কলকাতায় ইসকনের নেতৃত্বে জমায়েত হয়েছে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সামনে । পশ্চিমবঙ্গে ইতি উতি প্রতিবাদ শুরু হয়েছে । খবর আসছে পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্তেই ক্রমে প্রতিবাদ সংগঠিত হচ্ছে । লন্ডন, প্যারিস, রোম, সিডনি, একটার পর একটা খবর আসছে সতস্ফুর্ত প্রতিবাদের ।

শুধু কলকাতা এখনও আয়েসে ঘুমোচ্ছে, আলসে আর তার কাটছে না ।

ঠিক সেই সময় ঢাকার শাহবাগে, চট্টগ্রামে, কুমিল্লার রাজপথে তালে তালে হাজার হাজার মানুসের স্লোগান উঠছে –

সোনার বাংলা সোনার দেশ
মৌলবাদে করল শেষ

আর একই সময়ে এপার বাংলা তখন হিসেবে ব্যস্ত, আচ্ছা এঁদের ভোট কত ? ২৮ পার্সেন্ট না ২৯ পার্সেন্ট না ৩০ পার্সেন্ট ? ঠিক কত কেউ জানো ? মিছিল বার করলে এরা আবার চটে যাবে না তো ?

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.