ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত দুর্গাপুর। বুধবার বিকেলে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ভোলা রক্ষিত নামে এক ঠেলা ওয়ালার ঠেলার সব জিনিস ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। ঐ ঠেলাওয়ালা সিপিআইএমের পোলিং এজেন্ট হওয়াতেই তৃণমূলের গুন্ডারা তার উপর এই আক্রমণ করে বলে অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করে সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা। আর তার কিছুক্ষণ পড়েই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৩৯নম্বর ওয়ার্ডের আশীষ নগর এলাকা। তৃণমূল কাউন্সিলর শশাঙ্ক শেখর মন্ডলের বাড়ি ভাঙচুর করে এলাকার মানুষ। তোলাবাজি থেকে গুন্ডারাজের অভিযোগ তুলেছেন এলাকার মানুষ তার বিরুদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার রাতে। সোমবার ভোট চলাকালীন দুর্গাপুরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে বিবেকানন্দ মল্লিক নামে এক ব্যক্তি সিপিএমের পোলিং এজেন্ট হন। কেন তিনি সিপিএমের পোলিং এজেন্ট হয়েছে সেই অপরাধে তাকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। বুধবার সন্ধ্যেবেলায় ওই সিপিএম কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূল কাউন্সিলর শশাঙ্ক শেখর মন্ডল ও তার ভাই শিবু মন্ডল,মারধর করা হয় ওই পরিবারের সদস্যদের বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফুঁসছে থাকে স্থানীয়রা।
রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে অভিযুক্ত কাউন্সিলর ও তার গুন্ডা বাহিনীর ওপর চড়াও হন এলাকার বিরোধী দলের কর্মীরা। তৃণমূল বনাম বিরোধীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে চেহারা নেয় এলাকা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে সেখানে র্যাফও নামানো হয়। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এলাকায় বসানো হয় পুলিশ পিকেট। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল করে সাধারণ মানুষ পুলিশ সূত্রে খবর পলাতক অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ঐ অভিযুক্ত কাউন্সিলর শশাঙ্ক শেখর মন্ডল। তার বিরুদ্ধে গুন্ডারাজ, তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তার এই আচরণের ফলে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে থাকে এলাকার মানুষের মনে। আর সেই কারণেই সিপিএমের এই কর্মীর ওপর আক্রমণের ঘটনা জানাজানি হতেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একসাথে আক্রমণ সানায়। স্থানীয় মানুষের দাবি কাউন্সিলরকে অপসারণ করে সেখানে পুননির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। তারা জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মিটিং মিছিলে না গেলে তাদের হুমকি দেওয়া হতো জমি বাড়ি কেড়ে নেওয়া, ভাঙচুর করা সহমারধর করার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হতো। এছাড়াও ওই এলাকায় নানা ধরনের অসাধু কাজকর্ম চালাতে ওই কাউন্সিলর বলে তাদের অভিযোগ। কেউ যদি সাধারণভাবে ওই এলাকায় বিয়ে বাড়ির জন্য প্যান্ডেল করবে মনে করত তার কাছে১০ হাজার টাকা দাবি করত ওই কাউন্সিলর বলে জানিয়েছে স্থানীয় মানুষরা। সকলের কাছ থেকে নিয়মিত তোলা তুলত ঐ কাউন্সিলর বলে অভিযোগ। দীর্ঘ দিনের চাপা ক্ষোভ এদিন জনরোষের আকার নেয়।