যে যা-ই বলুক, আমার মেয়েদের কখনও ঘরের বাইরে খেলতে দেব না! আফ্রিদির বক্তব্যে নিন্দার ঝড়

তাঁর আত্মজীবনী ‘গেমচেঞ্জার’ প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। আর তা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না তাঁর। তিনি পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার শহিদ আফ্রিদি।

কখনও তিনি গৌতম গম্ভীরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তাঁর বইয়ে, কখনও বা আক্রমণ করেছেন সহ-খেলোয়াড় ওয়াকার ইউনিসকে। আফ্রিদির নানা রকম আপত্তিজনক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তের দু-পারেই। সেই বিতর্কেই নতুনতম সংযোজন আফ্রিদির পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা। কারণ আত্মজীবনীতে তিনি স্পষ্ট লিখেছেন, নিজের মেয়েদের কখনও ঘরের বাইরে খেলতে যেতে দেননি তিনি। কারণ তাঁর ধর্ম সেই অনুমতি দেয় না।

আফ্রিদির চার কন্যা- আনশা, আজওয়া, আসমারা এবং আকসা। তাদের বাবাই স্বীকার করেছেন, তারা কোনও দিন আউটডোর স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করার অনুমতিই পায়নি। ক্রিকেটার আফ্রিদি তাঁর আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন, তাঁর এই সিদ্ধান্তের পিছনে ‘ধর্মীয় ও সামাজিক’ কারণ রয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলিতে আফ্রিদির আত্মজীবনীর বক্তব্য বড় করে ছাপা হয়েছে। সমালোচনা করা হয়েছে তাঁর। তার জবাবে আফ্রিদি সাফ বলেছেন, “নারীবাদীরা আমাকে যা খুশি বলতে পারেন।”

জানা গেছে, আফ্রিদির দুই মেয়ে আজওয়া ও আসমারা খেলাধুলোয় বেশ পারদর্শী ছোট থেকেই। তবে তাদের কখনওই ঘরের বাইরে বেরোনোর অনুমতি দিতেন না আফ্রিদি। তিনি লিখেছেন, “আজওয়া ও আসমারা সব থেকে ছোট। ওরা ব্যালে নাচ, বাইক রাইডিং, যোগ ব্যায়াম, কিক বক্সিং ভালবাসত। তবে ঘরের মধ্যে ওদের যে কোনও খেলার অনুমতি দেওয়া ছিল। তবে আমার মেয়েরা কখনও জনসমক্ষে প্রতিযোগিতায় নামেনি। আমি নামতে দিইনি।”

শহিদ আফ্রিদি জানিয়ে দেন যে, এটাই তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, যা কেউ বদলাতে পারেনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইসলামিক দেশ হলেও, পাকিস্তানে মেয়েদের বাড়ির বাইরে খেলা নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। পাকিস্তানে মহিলাদের ক্রিকেট টিমও রয়েছে। ক্রিকেট ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি আউটডোর গেমের মহিলা টিম পাকিস্তানে আছে। কিন্তু নিজে ক্রিকেট খেলোয়াড় হওয়া সত্ত্বেও আফ্রিদি নিজের মেয়েদের কোনও আউটডোর গেম খেলার অনুমতি দিতে চান না।

এমনিতেই আফ্রিদির আত্মজীবনী ‘গেমচেঞ্জার’ তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে সম্প্রতি। কাশ্মীর, নিজের বয়স লুকোনো, দেশের অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডের বিষয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল থাকা– আফ্রিদি মানেই বিতর্কের গনগনে আঁচ।

তবে এই তালিকায় মেয়েদের প্রতি আফ্রিদির মানসিকতা ভয়ঙ্কর পিতৃতান্ত্রিক ইঙ্গিত, এমনটাই মনে করছেন সকলে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও আফ্রিদিকে প্রাচীনপন্থী মানসিকতার জন্য তুমুল সমালোচিত হতে হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.