উঠে যাবে স্কুল! চন্দ্রকোনায় শিক্ষকহীন শিক্ষাকেন্দ্রে পড়ুয়াদের নিয়ে ‘শেষ’ বাণীবন্দনা, আয়োজনে গ্রামবাসী

স্কুল আছে। পরিকাঠামো আছে। পড়ুয়াও আছে। শুধু নেই শিক্ষক-শিক্ষিকা! স্কুল এবং পড়ুয়াদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎকে সামনে রেখেই সোমবার সরস্বতী পুজো হল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের নিশ্চিন্তপুর শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে। গ্রামবাসীদের উদ্যোগ ও সহযোগিতায় স্কুলে সরস্বতী পুজো হলেও সকলেই দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত। স্কুল বন্ধ হলে তাদের সন্তানদের কী হবে তা নিয়েই ভাবিত অভিভাবকেরা।

২০০০ সালে স্থাপিত হয় এই স্কুল। প্রথম থেকেই স্কুলে ছিলেন দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। ২০২২ সালে এক শিক্ষিকা অবসর নেন। চলতি বছর ৩১ জানুয়ারি আর এক শিক্ষক তরুণ পাল অবসর নেন। বর্তমানে প্রায় ২৫ জন পড়ুয়া ওই স্কুলে পড়ে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সোমবার সরস্বতী পুজো উপলক্ষে স্কুলে উপস্থিত ছিলেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তরুণ। তিনি বলেন, “এখন স্কুলের পরিস্থিতি খুবই বেদনাদায়ক। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কারণে স্কুলটি উঠে যেতে বসেছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, এই স্কুলে যেন শিক্ষক নিয়োগ হয়।”

রেখা মল্লিক নামে এক গ্রামবাসী জানান, স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা খুব সমস্যায় পড়বেন। এই গ্রাম থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে অন্যান্য স্কুল রয়েছে। তিনি বলেন, “বর্ষায় এখানে খুব জল জমে। বন্যা পরিস্থিতিতে অত দূরে ছেলেমেয়েদের নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই স্কুল উঠে গেলে ছেলেমেয়েরা মানুষ হবে কী করে?”

স্কুলের রাঁধুনি তরুলতা মল্লিক প্রথম থেকেই এই স্কুলের রান্নার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, “এই স্কুলে সব ধরনের পরিকাঠামো আছে। শুধু শিক্ষকের অভাবে স্কুলটি বন্ধ হতে চলেছে। যে সব পরিবার আর্থিক সচ্ছল তারা তাদের সন্তানদের জন্য গৃহশিক্ষকের ব্যবস্থা করেছে। বাকি ছেলেমেয়েরা বাড়িতেই বসে আছে। লেখাপড়া হচ্ছে না।”

আর এক গ্রামবাসী শম্ভু মল্লিক জানান, এই স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে গোটা এলাকাই শিক্ষার অভাবে অন্ধকারে ড়ুবে যাবে। সকলেই জানান, স্কুলের সমস্ত পরিকাঠামো থাকলেও নেই শিক্ষক। ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রত্যেকে। এ বিষয়ে চন্দ্রকোনা এক নম্বর ব্লকের বিডিও কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তে শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব নয়। সম্ভবত ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অন্যত্র পাঠাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.