জাতগণনাও করা হবে। বুধবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক কমিটি। তবে জাতগণনা সংক্রান্ত তথ্য আলাদা করে প্রকাশ করা হবে না। আগামী জনগণনার সঙ্গেই এই সংক্রান্ত তথ্য সংযোজিত হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর রাজনৈতিক কমিটির বৈঠক শেষে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেল এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
দীর্ঘদিন ধরেই জাতগণনার দাবিতে সরব ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কোনও কোনও রাজ্যে আলাদা ভাবে জাত সমীক্ষাও হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বিহার। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির জোটসঙ্গী নীতীশ কুমারও জাতগণনার দাবিতে সরব ছিলেন। নিজের রাজ্যেও জাত সমীক্ষার তথ্যও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। চলতি বছরে শেষে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে নীতীশকে ‘তুষ্ট’ রাখতেই কি এই সিদ্ধান্ত নিল মোদীর মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটি? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে। যদিও জাতগণনার প্রসঙ্গে বিজেপি কখনও প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেনি। এই অবস্থায় গত এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা মোদী সরকারের হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিহারের ভোটের রাজনৈতিক সমীকরণ খুঁজতে শুরু করেছেন অনেকে।
বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অশ্বিনী বলেন, “রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী জনগণনার সঙ্গে জাতিগণনার তথ্যও যুক্ত করা উচিত।” অশ্বিনীর বক্তব্য, কিছু রাজ্য জাতগত তথ্যসংগ্রহের জন্য সমীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। সে ক্ষেত্রে সব রাজ্যে পদ্ধতি সঠিক ছিল না বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অশ্বিনীর দাবি, কিছু রাজ্য এই সমীক্ষা ভাল ভাবে করলেও বাকি রাজ্যগুলির সমীক্ষায় অস্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ রয়ে গিয়েছে। এর ফলে সমীক্ষাগুলি ঘিরে সমাজে বেশ কিছু ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। রাজনীতির কারণে যাতে সমাজের শৃঙ্খলায় কোনও প্রভাব না-পড়ে সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। তিনি জানান, সেই কারণেই জাত সংক্রান্ত তথ্যের জন্য সমীক্ষার বদলে গণনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতগণনায় সম্মত হলেও এই নিয়ে অতীতের কংগ্রেস জমানাকে বিঁধতে ছাড়ল না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অশ্বিনীর দাবি, কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীন সবসময় জাতিগণনায় আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, “প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ২০১০ সালে জানিয়েছিলেন, জাতগণনার বিষয়টি মন্ত্রিসভায় বিবেচনা হওয়া উচিত। সেই মতো এই বিষয়টি বিবেচনার জন্য কয়েক জন মন্ত্রীকে নিয়ে তারা একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছিল। তখন বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলই জাতগণনার পক্ষে ছিল। তার পরেও তৎকালীন কংগ্রেস সরকার জাতগণনার বদলে শুধু মাত্র একটি জাতি সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়।” অশ্বিনীর অভিযোগ, কংগ্রেস এবং বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্য দলগুলি জাতগণনাকে সবসময় রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে এসেছে।