আন্তর্জাতিক যোগ দিবস

২১ জুন, সোমবার গোটা বিশ্ব জুড়ে পালন করা হবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগেই রাষ্ট্রপুঞ্জের জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে এই যোগা দিবসের খসড়া প্রস্তাব পাশ হয় এবং ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস বলে অ্যাখা দেওয়া হয়। যোগাভ্যাসের উপকারিতা অনেক, নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখতে হলে যোগের বিকল্প আর নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদী বিশ্ব নেতাদের এই দিবসকে গ্রহণ করতে বলেন এবং তিনি জানান যে যোগা জীবনকে পরিবর্তন করে এবং চেতনা তৈরি করে, এটা জলবায়ু পরিবর্তনে সহায়তাও করে।

মনে করা হয় যে হাজার হাজার বছর আগে ভারতেই প্রথম যোগচর্চা শুরু হয়েছিল এবং তার উল্লেখও পাওয়া যায় ঋক বেদের মতো প্রাচীন পৌরাণিক বইগুলিতে।


২১ জুন কেন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করা হয়
২১ জুন (‌গ্রীষ্ণকালীন সলস্টিস)‌ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করার কারণ নিয়ে মোদী বলেন, ‘‌এই তারিখটিতে উত্তর গোলার্ধের দীর্ঘতম দিন হিসেবেও পালন করা হয়। তাই এই বিশেষ দিনের তাৎপর্য রয়েছে।’‌


পৌরাণিক কাহিনী
ভারতের প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনীতে, সলস্টিসকে যোগ বিজ্ঞানের উৎস বলে চিহ্নিত করা হয়। এটা মনে করা হয় যে গ্রীষ্ণকালীন সলস্টিসের একদিন আদি যোগী তাঁর সবচেয়ে নিষ্ঠাবান সাত জন শিষ্যকে প্রথম দেখেন যাঁরা আলোকপাতের পথ প্রদর্শন না করা পর্যন্ত তাঁকে ছেড়ে না যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। এরপর পরবর্তী পূর্ণিমাতে আদি যোগী ওই শিষ্যদের যোগিক ক্রিয়া পদ্ধতি শেখাতে শুরু করেন। তাই গ্রীষ্ণকালীন সলিস্টিসকে যোগিক ক্রিয়ার দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসটি গ্রীষ্মের সল্টসিজের দিনটিতে এইভাবে বিশেষ তাৎপর্য রাখে।


যোগের তাৎপর্য
যোগ শব্দটি সংস্কৃত থেকে এসেছে। যার অর্থ হল যোগ দেওয়া বা একত্রিত হওয়া। যোগ-ব্যায়াম হল দেহ এবং চেতনার মিলন। প্রতিদিনের জীবনে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসটি ১৫ ই জুন, ২০১৫ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছিল। ভারতের আয়ুশ মন্ত্রক একটি কর্মসূচির আয়োজন করেছিল, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ৮৪ টি দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নিয়েছিলেন। নয়াদিল্লির রাজঘাটে মোট ৩৫,৯৮৫জন লোক ২১ রকমের যোগাসন করেছিলেন। যা দুটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে নাম উঠে যায়।


আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ২০২১ থিম
এবারের থিম হল ‘বাড়িতে যোগ এবং পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যোগাসন করা’। পুরো বিশ্ব করোনা মহামারির সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যস্ত। সেই অসম লড়াইয়ে বিশ্ববাসীকে শরীরচর্চা ও সুস্থ রাখতে এই থিম একটি আশার আলো দেখাতে পারে। এই বছর আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের মূল লক্ষ্য হল ‘সুস্থতার জন্য যোগ’। মহামারীর সময় যোগব্যায়ামে মানসিক-সামাজিক যত্নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। টানা লকডাউনের জেরে কোভিড রোগীদের হতাশা এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যা দেখা গেছে। প্রতিটি ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য এই শারীরিক ক্রিয়াকলাপের অবদানকে কেন্দ্র করেই এই বছরের থিম নির্ণয় করা হয়েছে। এছাড়াও, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মানসিকতা তৈরি করতে বিভিন্ন যোগাসনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.