আক্রান্ত ও মৃত্যুর নিরিখে সব জেলা থেকে কলকাতা অনেকটা এগিয়ে তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল করোনার সেরো সার্ভে রিপোর্ট থেকে। আইসিএমআর রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের উদ্যোগে মাসখানেক আগে কলকাতার ১৭টি ওয়ার্ডে করোনা ভাইরাসের সেরো সার্ভে বা সমীক্ষা শুরু করে। কলকাতা পুরসভা ছিল এই সমীক্ষার নোডাল এজেন্সি। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এই প্রথম এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল। লেখা হয়েছিল, মহানগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে সংক্রমণের হার এবং “হার্ড ইমিনিউটি” বা প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা তা যাচাই করে নিতেই দেশের বেশ কয়েকটি মেগাসিটির সঙ্গে কলকাতায় সেরো সার্ভে সমীক্ষা করবে আইসিএমআর। সম্প্রতি এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা মিলিয়ে শহরের ১৭টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের থেকে রক্ত পরীক্ষা হয়।
স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী অন্তত দু ’হাজার বাসিন্দার রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল। যাঁদের কেউ সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যের বাইরে যাননি। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, সংগৃহীত রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে অন্তত ১৭ শতাংশের করোনা পজিটিভ। এই তথ্য থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, যে কোনও জেলা থেকে করোনা সংক্রমণে অনেকটাই এগিয়ে কলকাতা। তবে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং নাইসেড একযোগে জানিয়েছে, যখন রক্ত নেওয়া হয়েছিল তারপর অনেকটা সময় পার হয়েছে। সেই সময় যাদের উপসর্গ ছিল না বা মৃদু উপসর্গ ছিল, তাঁরা এখন কী অবস্থায় আছেন তাও জানতে হবে। তবে কলকাতায় এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি তাও স্পষ্ট। কলকাতার দক্ষিণের কিছু ওয়ার্ডে হার্ড ইমিনিউটি তৈরি হচ্ছে। এই সংখ্যা যত বাড়বে ততই করোনাকে ঘায়েল করা সম্ভৱ বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে, শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং শিলিগুড়ির জেলাশাসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে ডেঙ্গু-কোভিডের জোড়া মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণের উপরে জোর দেন মুখ্যসচিব। জুলাই-আগস্টে রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের একাংশ। এই সময়টা ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে রাজ্যে। ইতিমধ্যেই কলকাতায় ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রায় ১০০ জন। যাতে অবশ্য কলকাতা পুরসভা বলছে, উদ্বেগের কিছু নেই। কিন্তু কো-মরবিডিটির রোগীর ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ও করোনার জোড়া ফলা মারণ হতে পারে। তাই এখনই পরিকল্পনা করে না এগোলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই পাঁচ জেলার প্রতিনিধিদের সতর্ক করা হয়েছে নবান্নের তরফে।