‘সরকারি চুক্তিভিত্তিক সব কর্মীকে বর্ধিত বেতন দিতে হবে’, রাজ্যের যুক্তি খারিজ করে বলল হাই কোর্ট

রাজ্যের সরকারি চুক্তিভিত্তিক সব কর্মীকে নতুন নিয়ম মেনে বর্ধিত বেতন দিতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন নিয়ে কোনও বৈষম্য করা যাবে না। চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের একাংশের মামলায় রায় ঘোষণা করে মঙ্গলবার জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সুজয় পাল এবং স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখে জানিয়েছে, একই কাজে নিযুক্ত কর্মীদের শুধুমাত্র চাকরিতে যোগদানের তারিখ ধরে আলাদা বেতন দেওয়া অন্যায়। এটি সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। রাজ্যের যুক্তি খারিজ করে নতুন নিয়মে বর্ধিত বেতন বহাল রেখেছে আদালত।

২০১১ সালে রাজ্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিল, যে সব অস্থায়ী কর্মচারী চাকরিতে ১০ বছর পূর্ণ করবেন, তাঁদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু শর্ত হল— ২০১০ সালের ১ এপ্রিলের পরে যাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা ওই সুবিধা পাবেন না। এর পরে ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে রাজ্য আবার নতুন নোটিস দেয়। সেখানে তারা বলে, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ৫ বছর, ১০ বছর এবং ১৫ বছর চাকরির উপর নির্ভর করে বেতন বৃদ্ধি করা হবে। এর পরে ২০১০ সালের পরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন এমন অস্থায়ী কর্মচারীদের বক্তব্য, তাঁরাও ৫–১০ বছর চাকরি করছেন। তাই ২০১৬ এবং ২০১৯ সালের নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁদেরও বেতন বৃদ্ধি করা উচিত।

রাজ্যের যুক্তি ছিল, ২০১১ সালের শর্ত এখনও কার্যকর রয়েছে। ফলে যাঁরা ২০১০ সালের পরে চাকরিতে ঢুকেছেন, তাঁদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে না। রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন ওই কর্মচারীরা। গত বছর হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, নতুন নোটিসে ২০১০ সালের শর্ত নেই। তাই ওই কর্মচারীদের বর্ধিত বেতনের সুবিধা দিতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। মঙ্গলবার সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়ই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। দুই বিচারপতির বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে জানায়, চাকরির তারিখ ধরে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের আলাদা বেতন নয়। নতুন নোটিস অনুযায়ী সকলের বেতন বৃদ্ধি করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.