‘দেখে যান, পুতিন কী করেছেন’! রুশ হামলার পর ট্রাম্পকে ইউক্রেনে যাওয়ার আহ্বান জ়েলেনস্কির

ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুমি। রবিবার সেই শহরের কেন্দ্রস্থলে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে। দাবি, রাশিয়া থেকেই ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। রুশ হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৩৪ জনের! সেই ঘটনার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর দেশে আসার জন্য অনুরোধ করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি! তাঁর আবেদন, ‘‘আসুন, দেখে যান (ভ্লাদিমির) পুতিন কী করেছেন।’’

ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে তিন বছর ধরে। এখনও পর্যন্ত শান্তি স্থাপনের সব রকম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইতিমধ্যে, উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছে আমেরিকা। শান্তিপ্রস্তাবের জন্য নানা প্রস্তাবও দিয়েছে মার্কিন মুলুক। এই বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরেছেন ট্রাম্প। তবে জ়েলেনস্কির আবেদন, চলমান যুদ্ধ নিয়ে কোনও চুক্তি বা সিদ্ধান্তে আসার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইউক্রেনে আসার জন্য!

সংবাদ সংস্থা সিবিএস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্পের উদ্দেশে জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘দয়া করে, কোনও ধরনের সিদ্ধান্ত বা আলোচনার আগে এখানে এসে দেখে যান সাধারণ মানুষ, হাসপাতাল, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, গির্জার কী অবস্থা হয়েছে।’’

রবিবার রুশ হামলার বিষয়টি নিজেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানান ‌জ়েলেনস্কি। তাঁর শেয়ার করা ভিডিয়োতে দেখা যায়, সুমি শহরের রাস্তায় বেশ কয়েক জন মৃতদেহ এবং আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করছেন ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাচ, কংক্রিটের টুকরো। পোড়া গাড়ি দাঁড়িয়ে রাস্তার উপর। পুড়ে গিয়েছে বহু বাড়িঘরও। রুশ হামলার টুকরো টুকরো ছবি পোস্ট করে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট আহ্বান করেন, ‘‘বিশ্বকে এই হামলার ঘটনার দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। আমেরিকা, ইউরোপ এবং যারা যারা এই চলমান যুদ্ধের অবসান চায়, তাদের উচিত এক হয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো।’

বিশ্বনেতারাও রবিবার রুশ হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ রুশ হামলার নিন্দা করেন। তাঁর দাবি, রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ণ করছে। মাকরঁ কথায়, ‘‘রাশিয়ার উপর যুদ্ধবিরতি আরোপের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন।’’ একই সুর শোনা যায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির কণ্ঠেও। রুশ হামলাকে তিনি ‘ভয়াবহ’ এবং ‘কাপুরুষোচিত’ বলে নিন্দা করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কায়ের স্টার্মারের কার্যালয়ও রুশ হামলায় ‘মর্মাহত’ বলে জানিয়েছে। ইউক্রেনের উপর রুশ হামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্পও। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয় এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। পুরো যুদ্ধ বিষয়টাই ভয়াবহ।’’ রুশ হামলার পর আমেরিকা কোন পথে হাঁটে, সেই দিকে তাকিয়ে অনেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.