তবলায় জাদুস্পর্শ স্তব্ধ হল। রবিবার সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন কিংবদন্তি তবলাবাদক, সঙ্গীতজ্ঞ, অভিনেতা উস্তাদ জ়াকির হুসেন। তাঁর প্রয়াণের খবর নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, তবলাবাদক প্রয়াত হয়েছেন।
কলকাতায় ঠিক এই সময়ে এক অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু জ়াকিরের শারীরিক অসুস্থতার জন্য বাতিল হয় সেই অনুষ্ঠান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত দু’সপ্তাহ ধরেই তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল।
জ়াকির হুসেনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক্সে লেখেন, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ তবলাবাদক উস্তাদ জ়াকির হুসেনের মৃত্যুতে গভীর ভাবে মর্মাহত। দেশের এবং তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্তদের জন্য চরম ক্ষতি। জ়াকির হুসেনের পরিবার এবং তাঁর ভক্তদের আমি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।”
জ়াকিরের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন জ়াকির। হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জ়াকিরের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির খবর পেয়ে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অনুরাগীরা তাঁর সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা শুরু করেন। কিন্তু সেই সব প্রার্থনাকে ব্যর্থ করে দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।
১৯৫১ সালে মুম্বইয়ে জন্ম জ়াকিরের। তাঁর পিতা উস্তাদ আল্লা রাখাও ছিলেন প্রখ্যাত তবলাবাদক। ভারত সরকারের পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তবলার সফর শুরু তাঁর। সাত বছর বয়স থেকে মঞ্চে একক অনুষ্ঠান করেছেন তিনি।
২০২৪ সালে জ়াকিরের হাত ধরেই ভারতে আসে গ্র্যামি পুরস্কার। ‘বেস্ট গ্লোবাল মিউজ়িক অ্যালবাম’ হিসাবে পুরস্কৃত হয় ভারতীয় ব্যান্ড ‘শক্তি’র গানের অ্যালবাম ‘দিস মোমেন্ট’। বর্তমানে ‘শক্তি’ ব্যান্ডের প্রধান কণ্ঠশিল্পী শঙ্কর মহাদেবন। তবলাবাদক হিসাবে রয়েছেন জ়াকির। বেহালায় গণেশ রাজাগোপালন এবং অন্য তালবাদ্যে ভি সেলভাগণেশ। গিটারে জন ম্যাকলকলিন। ২০২৩ সালের ৩০ জুন ‘দিস মোমেন্ট’ অ্যালবামটি মুক্তি পায়। মোট আটটি ট্র্যাক রয়েছে এই অ্যালবামে।
জ়াকির তবলায় সঙ্গত করেছেন পন্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ আমজাদ আলি খান, জর্জ হ্যারিসনের মতো দিকপালেদের।