কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে হাতে বাংলার সাফল্যের প্রচারপত্র বিলি তৃণমূলের, বিরোধীরা বলছে, ‘ম্যানেজের চেষ্টা’

পঞ্চায়েত ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘প্রভাবিত’ করার অভিযোগ উঠল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে একটি টুইট করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। আর এই টুইটকে ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। টুইটে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ানের হাতে প্রচারপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। হিন্দিতে লেখা প্রচারপত্রটির ছবি টুইট করে কুণাল লেখেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জন্য প্রচারপত্র।” হিন্দিতে লেখা ওই প্রচারপত্রে ‘কন্যাশ্রী’, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-সহ তৃণমূল সরকারের একাধিক প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ভোটের আগে নিচুতলায় বাহিনীকে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। শাসকদলের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও এনেছে তারা।

পঞ্চায়েত ভোটের শেষ দিনের প্রচারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কেন্দ্র নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন কুণাল। সেখানেই বাহিনীর সদস্যদের হাতে এই প্রচারপত্র তুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। হিন্দিতে লেখা ওই প্রচারপত্রে লেখা ছিল, “আপনার রাজ্যে আপনারা কি কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ বাংলার সামাজিক সুরক্ষাগুলির মতো প্রকল্প পান? আপনি বাড়ি ফেরার পর দাবি তুলুন, বাংলার রাজ্য সরকারের মতো পারিবারিক বন্ধু সরকার চাই। সুরক্ষা চাই।” লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল অন্য রাজ্য থেকে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে প্রচার চালাতে চাইছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর পাশাপাশি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাহিনীকে তৃণমূল নিজেদের ‘অনুকূলে’ নিয়ে আসতে চাইছে বলেও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের মতো দলগুলি।

https://platform.twitter.com/embed/Tweet.html?creatorScreenName=anandabazar&dnt=false&embedId=twitter-widget-0&features=eyJ0ZndfdGltZWxpbmVfbGlzdCI6eyJidWNrZXQiOltdLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X2ZvbGxvd2VyX2NvdW50X3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9iYWNrZW5kIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19yZWZzcmNfc2Vzc2lvbiI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZm9zbnJfc29mdF9pbnRlcnZlbnRpb25zX2VuYWJsZWQiOnsiYnVja2V0Ijoib24iLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X21peGVkX21lZGlhXzE1ODk3Ijp7ImJ1Y2tldCI6InRyZWF0bWVudCIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZXhwZXJpbWVudHNfY29va2llX2V4cGlyYXRpb24iOnsiYnVja2V0IjoxMjA5NjAwLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X3Nob3dfYmlyZHdhdGNoX3Bpdm90c19lbmFibGVkIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19kdXBsaWNhdGVfc2NyaWJlc190b19zZXR0aW5ncyI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdXNlX3Byb2ZpbGVfaW1hZ2Vfc2hhcGVfZW5hYmxlZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdmlkZW9faGxzX2R5bmFtaWNfbWFuaWZlc3RzXzE1MDgyIjp7ImJ1Y2tldCI6InRydWVfYml0cmF0ZSIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfbGVnYWN5X3RpbWVsaW5lX3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9mcm9udGVuZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9fQ%3D%3D&frame=false&hideCard=false&hideThread=false&id=1677168117829730306&lang=bn&origin=https%3A%2F%2Fwww.anandabazar.com%2Fwest-bengal%2Ftmc-distributed-leaflet-to-central-force-jawan-opposition-partys-slameed-ruling-party-for-violating-norms-dgtl%2Fcid%2F1443106&sessionId=354e2aaad4e3cbe3d765bef6f81cbe7e4a74f924&siteScreenName=anandabazar&theme=light&widgetsVersion=aaf4084522e3a%3A1674595607486&width=550px

এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বৃহস্পতিবার প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও এই ধরনের কাজ করে যাচ্ছে তৃণমূল। এটা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ছাড়া আর কী?” এর পাশাপাশি অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, “গোড়া থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়ে এসেছে তৃণমূল। হাই কোর্টের নির্দেশে ভোটের আগে বাহিনী এলেও নিচুতলায় তাঁদের ম্যানেজ করতে চাইছে শাসকদল।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় পাল কুণালকে কটাক্ষ করে বলেন, “চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষের সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছা হয় না। আশা করব কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্বাচনের আগে এবং পরে সঠিক ভূমিকা পালন করবে।” এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছে কংগ্রেসও। রাজ্যের যুব কংগ্রেস সভাপতি আজহার মল্লিকও কুণালকে কটাক্ষ করে বলেন, “সারদা কাণ্ডের সব চেয়ে বড় সুবিধাভোগীর নাম রাজ্যবাসীকে যিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম রাজ্যবাসী ভোলেনি।” এর পাশাপাশি তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিও তো তৃণমূল সরকারের প্রকল্প। আশা করি সেটার কথাও ওই প্রচারপত্রে লেখা হয়েছে।”

বিতর্কের প্রেক্ষিতে কুণাল অবশ্য নিজের বক্তব্যে অনড়। তাঁর কথায়, “রাজ্যে ভোটের জন্য নিরাপত্তায় যত বাহিনী আসবে, আমরা তাঁদের সকলকে আমাদের প্রচারক করে অন্য রাজ্যে পাঠাব।” এর পাশাপাশি রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “শুভেন্দু যখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, আপনাদের দিল্লি পাঠিয়েছে, আপনারা তাই রাজ্য পুলিশের কথা শুনবেন না, তখন নিয়মভঙ্গ হয় না?” বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “আমি একটি মামলায় অভিযুক্ত ছিলাম, দোষী সাব্যস্ত নই। তদন্ত থেকে বাঁচতে আমি দল বদলাইনি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.