শিক্ষককে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতারে গড়িমসি, মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ ৪ শিক্ষক সংগঠন।

সাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে স্কুল শিক্ষককে রাস্তায় টেনে হিঁচড়ে নির্মমভাবে মারধর, গায়ের উপর পোষা কুকুক লেলিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতারে গড়িমসি পুলিশের। বাধ্য় হয়েই এ বার, মালদার মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করল নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি-সহ মোট ৪ টি শিক্ষক সংগঠন।

শিক্ষক সংগঠন সূত্রে খবর, তৃণমূলের নেতা বলেই অভিযুক্তকে ধরতে গড়িমসি করছে পুলিশ। অন্য়ায় করার পরেও ওই নেতা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার না করা হলে আরও বড় আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে  শিক্ষক সংগঠনগুলি। বৃহস্পতিবার মহকুমা শাসকের কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। তবে প্রশাসন সূত্রে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
মালদহের জেলা ক্রীড়াক্ষেত্রে খুবই পরিচিত নাম সুদীপ টুডু। তাঁর একটা পরিচয় তিনি পেশায় শিক্ষক। তাঁর এক আত্মীয় মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গত সোমবার তাঁকে দেখতে তিনি হাসপাতালে যান। তার পর নিজের গাড়ি চালিয়ে মালঞ্চপল্লীতে নিজের বাড়ি যান।

অভিযোগ, ওই তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরী ও তাঁর সঙ্গী সাথীরা তাঁকে সাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে ঘিরে ধরেন। প্রথমে স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়ে যান ওই শিক্ষক। এর পর তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি নিজের গাড়ির চাবি দেখিয়ে জানান, তাঁর সঙ্গে নিজের গাড়ি আছে। আর তিনি একজন শিক্ষক। খামোখা তিনি কেন সাইকেল চুরি করতে যাবেন? এই কথা শুনে কাউন্সিলরকে নাকি বলতে শোনা যায় সঙ্গীসাথীদের, ‘শিক্ষকরা কি চুরি করে না?’

এর পর শিক্ষককে চূড়ান্ত হেনস্থা, মারধর করার পর তাঁর গায়ে কাউন্সিলরের পোষা কুকুরকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় শিক্ষকের দেহ। দীর্ঘ রাস্তা তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয়দের কয়েকজন ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এদিন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছেন সুদীপবাবু।

কপালে, গায়ে স্টিচ নিয়ে শিক্ষক বলেন, “আমাকে হঠাৎই তিন নম্বরের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারধর করেন। আমি জানাই আমি একজন স্কুল টিচার। আমার কাছে চারচাকা গাড়ি আছে। আমি চাবি দেখালাম। সব চাবি, মোবাইল কেড়ে নিল। তার পর বলল শিক্ষক কি চুরি করতে পারে না? এসব বলতে বলতে নিজের পোষা কুকুর আমার গায়ে লেলিয়ে দিল!” বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও মূল অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.