5 টি ছেলের হাতে অপহৃত হবার পরে একজন মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পুলিশি পরীক্ষার পরে জানা যায়, তাঁকে পালাক্রমে গণ-ধর্ষণ করা হয়েছে।
মুস্কিলের ব্যাপার হল, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমান মিললেও, ধর্ষিতার স্মৃতি থেকে যেন গোটা ঘটনা-টাই মুছে গেছে! কি হল, কখন হল, কিভাবে হল– এসব কিছুই ধর্ষিতার মনে নেই। রক্ত-পরীক্ষা করতেই পাওয়া গেল সামান্য রুফিজ-এর (Roofies) প্রমাণ।
Roofies বা Rophynol, বিস্ময়কর স্মৃতি-ধ্বংসী বড়ি। বর্তমানে, এটি “ধর্ষণ-বড়ি” (rape-drug) হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছে।
Roofies আদতে একটি সতী-বড়ি (Contraceptive pill/ গর্ভ-নিরোধক) হলেও, বর্তমানে ধর্ষক-রা একে ব্যবহার করছে, বিভিন্ন পার্টি থেকে মেয়েদের অপহরণ করতে। এমনকি ডাকাত-রাও ডাকাতির পর, গৃহ-কর্তা দের এগুলো কৌশলে বা জোর করে খাইয়ে দিচ্চে, যাতে পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দেবার মত কোন স্মৃতি অবশিষ্ট না থাকে।
এই ওষুধ-টা যাকে খাওয়ানো হচ্চে, তার মাথা সম্পুর্ন ফাঁকা হয়ে যায়। এবং খাওয়ানোর 20-30 মিনিট পরেই শুরু হয় আসল খেলা, এর প্রভাব শরীরে থাকে 10-12 ঘন্টা। এবং এই ওষুধের প্রভাব থাকাকালীন, তার সাথে কি ঘটছে, সেকথা কিন্তু আর মনে থাকে না।
সবথেকে খারাপ ব্যাপার হল, এই ওষুধ নেবার 24 ঘন্টা পরেই, শরীরে এর কোন চিহ্ন আর থাকে না। এমনকি 24 ঘন্টা পরে রক্ত-পরীক্ষা করালেও, রক্তে roofies-এর অস্তিত্ব আর ধরা পড়ে না।
সতী-বড়ি হবার কারণে, roofies খাইয়ে ধর্ষণ করলে, ধর্ষিতার গর্ভবতী হবার আশঙ্কা-ও থাকে না। ফলে, পরবর্তীকালে সন্তানের পিতৃত্ব পরীক্ষা করে ধর্ষকের পরিচয় জানার সুযোগ-ও থাকে না। তবে আসল ভয়ের কথা হল, অনেক মহিলার ক্ষেত্রে roofies খাওয়ানোর পরে, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয় ভয়ানক। সম্পুর্ন ভাবে বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কথাও শোনা গেছে।
মনে রাখতে হবে, Roofies সকলের অলক্ষ্যে মিশিয়ে দেওয়া হয় আপনার পানীয়ে। ফেলামাত্রই roofies তরলে মিশে যায়, এর কোন নিজস্ব স্বাদ-গন্ধ নেই। কাজেই কোনভাবেই বোঝা যাবে না আপনার পানীয়ে roofies মেশানো হয়েছে।
অতএব মেয়েরা, সাবধান হোন। কোন অপরিচিতের কাছ থেকে কোন পানীয় নেবেন না, পেপসি-কোলা হলেও না। কোন পার্টিতে গেলে, নিজের পানীয়ের গ্লাস কখনোই ফেলে রেখে যাবেন না। ফেলে রেখে গেলে, ফিরে এসে ওই পানীয়-টি আর খাবেন না।
কোথাও কোন তরল কিছু খাবার 10-15 মিনিটের মধ্যে গা-মাথা ঝিমঝিম করলে বা শরীরে অন্যরকম কিছু মনে হলে, সঙ্গেসঙ্গে কোন নিরাপদ জায়গায় যান। মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব কে ফোনে/মেসেজে তক্ষুনি ব্যাপারটা জানান। “এটা কিছু নয়” ভেবে এড়িয়ে যাবেন না। এবং 24 ঘন্টার মধ্যে রক্ত-পরীক্ষা অবশ্যই করান, রক্তে roofies-এর অস্তিত্ব পেলে সঙ্গেসঙ্গে পুলিশে খবর দিন। Roofies কিন্তু ভারতীয় ধর্ষক-দের মধ্যেও জনপ্রিয় হচ্ছে!
মনে রাখবেন, আপনার অজ্ঞতা-ই ধর্ষকের যোগ্যতা। অতএব, নিজে জানুন, অপরকেও জানতে সাহায্য করুন। আপনার সকল মেয়ে বন্ধু-দের whatsapp এবং ফেসবুকে forward করুন।
–স্মৃতিলেখা চক্রবর্তী (Smritilekha Chakraborty)