তাপপ্রবাহে পুড়ছে ইউরোপ। তীব্র দাবদাহে টেকা দায়। বেশিরভাগ জায়গায় পারদ পেরিয়েছে ৪০-এর কোঠা। মজা করে অনেকেই বলছেন, প্যারিস যেন পাল্লা দিচ্ছে পুরুলিয়াকেও। তবে ইউরোপের গণ্ডি পেরিয়ে এ বার তাপপ্রবাহ এগোচ্ছে গ্রিনল্যান্ডের দিকে। আর তার ফলে অজানা আশঙ্কায় বুক কাঁপছে বিজ্ঞানীদের। তাঁদের অনুমান, এই তীব্র গরমের প্রভাবে গলে যেতে পারে গ্রিনল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম বরফের পুরু আস্তরণ। সমীক্ষা বলছে, চলতি বছর হটেস্ট জুনের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ব। গত ৬৮ বছরের তথ্য ছানবিন করে এমনটাই জানা গেছে বলে দাবি করেছে নাসা।পিছিয়ে নেই জুলাই-ও। লাগামছাড়া তাপমাত্রা দেখা গিয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকী তাপপ্রবাহের দাপটে উত্তর মেরুতেও অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্রুত বরফ গলতে শুরু করেছে। জুলাইয়ের তাপপ্রবাহে আলাস্কা, কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডে তাপমাত্রা বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। ফলে বরফ গলেছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। গত তিন দশক ধরেই মেরু অঞ্চলে বরফ গলছে দ্রুত। প্রতিদিন অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে ২০ হাজার কিলোমিটার অঞ্চলের বরফ। কলোরাডোর ন্যাশনাল শো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এর আগে ২০১২ সালের জুলাই মাসে এই পরিমাণে বরফ গলেছিল।
তবে এ বার পরিস্থিতি যে ২০১২ থেকেও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে তেমনটাই আশঙ্কা করছেন ওয়ার্ল্ড মেটেওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের ক্লেয়ার ন্যুলিস। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র জুলাই মাসেই গ্রিনল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় উপরের অংশ থেকে ১৬০০ কোটি টন বরফ গলেছে, যা আয়তনে ৬৪ লক্ষ অলিম্পিক সুইমিং পুলের সমান। আবহবিদদের দাবি, গ্রিন হাউস গ্যাসের ফলেই এমন লাগামছাড়া হয়ে বাড়ছে পারদ।
![](https://ritambangla.com/wp-content/uploads/2019/07/Global-warming-ABC-News.jpg)
পরিসংখ্যান বলছে, গ্রিনল্যান্ডের অন্তত ৮০ শতাংশ জুড়ে জমা রয়েছে বিপুল পরিমাণ। এই পরিমাণ সম্পূর্ণ গলে গেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা গড়ে ৭ মিটার বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, তলিয়ে যাবে ভূ-খণ্ডের একটা বিরাট অংশ। ন্যুলিস জানিয়েছেন, চলতি বছর জুন মাস পর্যন্তও গ্রিনল্যান্ডের আবহাওয়ায় কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু ইউরোপে আচমকাই আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেওয়ায় এবং প্রচন্ড গরম পড়ার ফলে, প্রভাব পড়েছে গ্রিনল্যান্ডেও।
![](https://ritambangla.com/wp-content/uploads/2019/07/28044.jpg)
শুধু গ্রিনল্যান্ড নয়, প্রভাবে পড়েছে উত্তর মেরুতেও। আর্কটিক অঞ্চলে বরফ গলছে অন্যান্য বছরের চেয়ে দ্রুত গতিতে। ন্যুলিস জানিয়েছেন, ব্রিটেনের আবহাওয়া দফতরের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এক ভয়ঙ্কর তথ্য। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি এক বছর অন্তর ভয়াবহ তাপপ্রবাহের শিকার হবে গোটা দুনিয়া।