এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে একাধিকবার জইশ ই মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করার জন্য প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু চিনের বাধায় সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। এতদিনে শোনা যাচ্ছে, চিন মতবদল করেছে। মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হতে আর কোনও বাধা নেই। চলতি লোকসভা ভোটের মধ্যেই আসতে পারে সুখবর।
মাসুদ আজহারকে যদি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করা যায়, তাহলে মোদী সরকারের বড় ধরনের কূটনৈতিক বিজয় হবে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ৪০ জনের বেশি সি আর পি এফ জওয়ানের মৃত্যু ঘটে। মাসুদের সংগঠন জইশ ই মহম্মদ ওই ঘটনার দায় স্বীকার করে।
বিদেশ মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ অফিসার জানিয়েছেন, মাসুদের মৃত্যুঘণ্টা বাজবে আগামী ১ মে। রাষ্ট্রপুঞ্জ তাঁকে ওই দিন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করবে। চিন প্রথমে আপত্তি করেছিল। কিন্তু আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের চাপের মুখে তারা নতিস্বীকার করেছে। এবার পুলওয়ামা হানার মূল চক্রীকে শাস্তি দেওয়া যাবে।
মাসুদকে যদি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করা হয়, তাহলে তাঁর সব সম্পদ ফ্রিজ করে দেওয়া হবে। তাঁকে কেউ অস্ত্র বিক্রি করতে পারবে না। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করেও চিন কিছুদিন টালবাহানা করেছিল। তারা বলেছিল, ১৫ মে অবধি অপেক্ষা করা হোক। তারপরে মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করলে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমেরিকা থেকে চিনকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, আর বেশি সময় নেই। চিন ও তার ‘অল ওয়েদার ফ্রেন্ড’ পাকিস্তানকে শীঘ্র মাসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুলওয়ামা হানার কিছুদিনের মধ্যে ফ্রান্স রাষ্ট্রপুঞ্জের ১২৬৭ স্যাংশন কমিটিতে মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনে। নিরাপত্তা পরিষদে যে ১৫ টি দেশ সদস্য, তারা ওই স্যাংশন কমিটিরও সদস্য। ফ্রান্স ওই কমিটিতে মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করার পর আপত্তি তোলার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা যেদিন শেষ হচ্ছে, ঠিক সেইদিন, অর্থাৎ ১৩ মার্চ চিন আচমকাই বলে, তাড়াহুড়ো করে কারও বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করানো ঠিক নয়। ব্যাপারটা নিয়ে আরও আলোচনা হোক।
চিনের এই আচরণে অসন্তুষ্ট হয় সারা বিশ্ব। অভিযোগ ওঠে পাকিস্তানকে বাঁচানোর জন্যই মাসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধা দিচ্ছে চিন।