হাতেই গুনতে হবে ভোট! তাও আবার ১৯৩ মিলিয়ন লোকের!
এমনই অদ্ভুত প্রক্রিয়া চালু হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। আচমকাই সে দেশের সরকার জানায় একদিনে নেওয়া হবে গোটা দেশের ভোট। একইদিনে ভোট দেবেন ইন্দোনেশিয়ার সব বাসিন্দা। দিন দশেক আগেও হয়েও গিয়েছিল সেই রাজকীয় ভোটপর্ব। কিন্তু তারপরেই সামনে এসেছিল আর এক তথ্য। সরকার নির্দেশ দিয়েছিল ভোটকর্মীদের হাতেই গুনতে হবে সব ভোট। আর অভিনব কায়দার জন্যই বলি হয়ে হয়েছে অন্তত ২৭২ জন মানুষকে। অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন ১৯০০ ভোটকর্মী। অনুমান, হাতে ভোট গুনতে অত্যধিক সময় লাগার কারণে মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন কর্মীরা। তার জেরেই মৃত্যু হছে তাঁদের। গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ইন্দোনেশিয়া প্রশাসন।
গত ১৭ এপ্রিল ঘটা করে এ হেন অভিনব কায়দায় ভোট হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। যেখানে একইদিনে ভোট দিয়েছিল গোটা দেশ। প্রত্যেকে ব্যালট পেপারেই ভোট দিয়েছিলেন। তারপর খরচ কমানোর জন্যই অত্যাধুনিক মেশিনের ব্যবহার না করে হাতেই ভোট গোনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ভোটকর্মীদের। ৮ লক্ষ নির্বাচনী ভোট দিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দারা। শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছিল ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। সফল ভাবেই প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট জমা পড়েছিল। প্রসঙ্গত, ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দা মোট ২৬০ মিলিয়ন। তার মধ্যে ১৯৩ মিলিয়ন মানুষ এ দিন ভোট দেন। কিন্তু দেশের পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তে ৫ হাজার কিলোমিটার জুড়ে ৮ ঘণ্টা ধরে চলা নির্বাচন যে মারণরোগ ডেকে আনবে তা কে জানত? হাতে ব্যালট পেপার গুনতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক মানুষের।
প্রথমে অবশ্য নির্বাচনের এমন ঘটা দেখে ইন্দোনেশিয়ার ধন্য ধন্য করেছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু সময় যতই এগিয়েছে, চেহারাটা ততই পাল্টেছে। পরিসংখ্যান বলছে, হাতে ভোট গোনার জন্য এর মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ২৭২ জনের। অবসাদের কারণেই এই গণমৃত্যু বলে মত চিকিৎসকদের। কাজের অতিরিক্ত চাপে অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন ১৯০০ জন ভোটকর্মী। লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তোপের মুখে পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার নির্বাচন কমিশন (KPU)। দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক গত ২৩ এপ্রিল একটি সার্কুলার জারি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, অসুস্থ কর্মীদের সবরকম মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।