ভারতের কপালে জয়ের তিলক, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শুক্রবার সিরিজ জয়ের লক্ষ‍্যে বিশ্বজয়ীরা

সাদা বলের ক্রিকেটেও ধরা পড়ে যাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। স্পিন বলের বিরুদ্ধে দুর্বলতাও লুকিয়ে রাখা যাচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ভারত করে ৬ উইকেটে ২১৯ রান। জবাবে আয়োজকেরা করল ৭ উইকেটে ২০৮। টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ভারত জিতল ১১ রানে।

এক-দু’জনের ব্যাটে ভর করে মান বাঁচাচ্ছে সূর্যকুমার যাদবের দল। বুধবার যেমন মান বাঁচাল তিলক বর্মার অপরাজিত ১০৭ রানের ইনিংস। তিনটি ম্যাচের একটিতেও ওপেনিং জুটি ভরসা দিতে পারল না। প্রথম ম্যাচে শতরান করার পর সঞ্জু স্যামসনের ব্যাটে আবার খরা। পর পর দু’টি ম্যাচে তাঁর অবদান শূন্য। এ দিন আবার টানা ব্যর্থতা কাটিয়ে অর্ধশতরান করলেন অভিষেক শর্মা। দুই ওপেনারের খেলাতেই ধারাবাহিকতার তীব্র অভাব। অধিনায়ক সূর্যকুমার (১) নিজেও ধরা পড়ে যাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের কাছে। আইপিএলের দলগুলি হার্দিক পাণ্ড্য (১৮), রিঙ্কু সিংহদের (৮) কোটি কোটি টাকা খরচ করে ধরে রাখলেও তাঁদের ব্যাটেও রান নেই। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে শট নির্বাচনে ভুল করছেন তাঁরা। ফিনিশিংয়ের অভাব দেখা গেল সেঞ্চুরিয়নের ২২ গজেও।

পরের দিকের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ভারতীয় দলের ইনিংস যত দূর পৌঁছবে বলে মনে হচ্ছিল, তার বেশ কিছুটা আগেই থেমে গেল। শেষ ওভারে উঠল মাত্র ৪ রান। তবু ভারতীয় ইনিংসকে ঝকঝকে দেখাল তিলক বর্মার জন্য। ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কার সাহায্যে৫৬ রানে ১০৭ রানের ইনিংস খেললেন তিনি। এ ছাড়া অভিষেকের ২৫ বলে ৫০ রান এবং অতিরিক্ত হিসাবে পাওয়া ১৯ রান বাদ দিলে বাকি ভারতীয় ব্যাটারদের সম্মিলিত অবদান ৪৩!

সূর্যকুমারের দলের ব্যাটিং দুর্বলতা ঢেকে দিচ্ছেন বোলারেরা। সোজাসুজি বললে স্পিনারেরা। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারেরা স্পিন বলের বিরুদ্ধে কোনও দিনই তেমন দক্ষ নন। সেটাই কাজে লাগাচ্ছেন সূর্যকুমারেরা। যদিও এ দিন হতাশ করলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের বরুণ চক্রবর্তীও। হেনরিক ক্লাসেনের সামনে তাঁকে দিশেহারা দেখাল। মার খেলে লাইন-লেংথ ঠিক রাখতে পারলেন না। ২ উইকেট পেলেও বরুণ খরচ করলেন ৫৪ রান। তবে রবি বিশ্নোইয়ের বল সমলাতে কিছুটা সমস্যায় পড়লেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারেরা।

ক্লাসেন ২২ গজে আসার আগেই ভারতীয়দের কাজ সহজ করে দিয়েছিলেন এডেন মার্করামেরা। চাপের মুখে ভেঙে পড়ার পুরনো রোগ এ দিন দেখা গিয়েছে তাঁদের। ২২০ রান তাড়া করতে নেমে ৮৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পরিস্থিতি নিজেরাই কঠিন করে ফেলেন। মারমুখী ক্লাসেনও (২২ বলে ৪১) আরশদীপ সিংহের বলে আউট হলেন চাপের মুখে। আরশদীপও ভাল বল করলেন। ব্যাটের পর বল হাতেও হতাশ করলেন হার্দিক। মার্কো জানসেন ১৯তম ওভারে তাঁকে পিটিয়ে ২৬ রান করলেন! সাদা বলের ক্রিকেটেও ভারতের সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। জানসেন (১৬ বলে ৫৪) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের প্রথম অর্ধশতরান করে ম্যাচ প্রায় বার করে নিয়েছিলেন। পারলেন না আরশদীপের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের জন্য। ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিলেন বাঁহাতি জোরে বোলার।

বুধবার ম্যাচ হারলে সিরিজ় জেতার সুযোগ থাকত না ভারতীয় দলের সামনে। ম্যাচ জিতেও সিরিজ় জয় নিশ্চিত হল না। চার ম্যাচের সিরিজ়ে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেন সূর্যকুমারেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.