ভুটানের ঠান্ডায় জ্বলল মশাল, আবার চেনা ইস্টবেঙ্গল, ব্রুজ়োর ছেড়ে আসা বসুন্ধরাকে ৪-০ গোলে হারাল লাল-হলুদ

অবশেষে চেনা ইস্টবেঙ্গলের দেখা মিলল। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের ম্যাচে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে ৪-০ গোলে জিতল ইস্টবেঙ্গল। কোচ অস্কার ব্রুজ়োর পুরনো দলের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠলেন দিমিত্রি দিয়ামানতাকোস, নন্দকুমার শেকরেরা। ন’ম্যাচ পর ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বিদেশের মাটিতে জয় পেল ইস্টবেঙ্গল।

আইএসএলে ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে সাহসী ফুটবল খেলেও জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্রথম ম্যাচে ভুটানের লিগ জয়ী পারো এফসি-র বিরুদ্ধেও ড্র করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। মঙ্গলবার মরণবাঁচন ম্যাচে দেখা গেল চেনা ইস্টবেঙ্গলকে। ভুটানের ঠান্ডায় জ্বলল মশাল।

ম্যাচের প্রথম মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন দিয়ামানতাকোস। বসুন্ধরার বক্সে লালচুংনুঙ্গার ক্রস থেকে বল পান দিয়ামানতাকোস। বল ধরে হাফ টার্নে প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়ে গোল করেন তিনি। প্রথম মিনিটে গোল পেয়ে যাওয়ায় পর আর লাল-হলুদকে রুখতে পারেনি বসুন্ধরা। একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে নাগাড়ে ব্যস্ত রেখেছিলেন লাল-হলুদ ফুটবলারেরা।

বসুন্ধরার একাধিক ফুটবলারকে চেনেন ব্রুজ়ো। তাঁদের কোচিং করিয়েছেন তিনি। কে কী করতে পারেন, তা ভালই জানা রয়েছে ইস্টবেঙ্গল কোচের। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে রণকৌশল তৈরি করেছিলেন স্প্যানিশ কোচ। সেই কৌশলের কাছেই আটকে গিয়েছে বাংলাদেশের ক্লাবটি। প্রথমার্ধে গোল করার মতো খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। ১৭ মিনিটে সহজ সুযোগ পেয়েছিল বসুন্ধরা। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক প্রভসুখন গিলের তৎপরতায় গোল করতে পারেনি তারা। এর পর ২০ মিনিটে গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মহেশ সিংহ। তবে বলের নিয়ন্ত্রণ পা ছাড়া করেননি লাল-হলুদ ফুটবারেরা। বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন সৌভিক চক্রবর্তী। ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর ধীরে ধীরে খেলা থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে বসুন্ধরা। ২৬ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন নন্দকুমার। তাতেও লাল-হলুদের আক্রমণের তীব্রতা কমেনি। ৩৩ মিনিটে দলের পক্ষে চতুর্থ গোল আনোয়ার আলির। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন ইস্টবেঙ্গলের সেন্টার ব্যাক।

০-৪ গোলে পিছিয়ে থাকা বসুন্ধরার ফুটবলারেরা দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান কমানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। তাতে অবশ্য বিশেষ লাভ হয়নি। ইস্টবেঙ্গলও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে প্রতিপক্ষের বক্সে চাপ বজায় রেখেছিল। লাল-হলুদ ফুটবলারদের এ দিন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া অনেক ভাল হয়েছে। ফলে ভুল পাস বা মিস পাসের সংখ্যা কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে।

প্রথমার্ধেই জয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দিয়ামানতাকোসকে তুলে ক্লেটন সিলভাকে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ ব্রুজ়ো। মাঠে নেমেই প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার। কিন্তু গোল করতে পারেননি ক্লেটন। না হলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বৃদ্ধি করতে পারত লাল-হলুদ। যদিও বাকি সময়টা কিছুটা হিসেবি ফুটবল খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। চোট-আঘাত বাঁচিয়ে খেলার চেষ্টা করেছেন লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। শেষ দিকে গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বসুন্ধরার ফুটবলারেরা। গোল করার সুযোগও তৈরি করেছিল। কিন্তু লাভের লাভ হয়নি। এ দিন অবশ্য গত ম্যাচগুলির মতো ভুল করেনি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.