স্ত্রীর গয়নায় স্বামীর অধিকার নেই! অভাবে কাজে লাগালেও ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যিক: সুপ্রিম কোর্ট

স্ত্রীর গয়নাগাটিতে অধিকার নেই স্বামীর। অভাবের সময়ে সেই গয়না কাজে লাগালেও পরবর্তী কালে তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যিক। একটি মামলায় সম্প্রতি এমনটাই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারী মহিলার স্বামীকে গয়নার দাম বাবদ ২৫ লক্ষ টাকাও দিতে বলা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, ‘স্ত্রীধন’-এর উপর স্বামী এবং স্ত্রীর যৌথ অধিকার নেই। নিজের গয়নাগাটির মালিকানা থাকে শুধু স্ত্রীর কাছেই। প্রয়োজনে তিনি স্বামীকে সেই গয়না ব্যবহার করতে দিতে পারেন মাত্র।

কেরলের এক দম্পতির মামলায় এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারী মহিলা জানিয়েছেন, বিয়ের সময়ে নিজের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে তিনি যে গয়নাগাটি উপহার হিসাবে পেয়েছিলেন, বিয়ের রাতেই সেগুলি তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেন স্বামী। সেগুলি রাখা হয় তাঁর শাশুড়ির কাছে। গয়না নিরাপদে রাখার যুক্তিতে তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে জানান মহিলা। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তিনি জানতে পারেন, গয়নাগুলি পরিবারের ঋণ পরিশোধের কাজে লাগানো হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে যান মহিলা।

পারিবারিক আদালত তাঁর আবেদনে সায় দিয়েছিল। স্বামীকে ক্ষতিপূরণ দিতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে কেরল হাই কোর্টে যান মহিলার স্বামী। সেখানে মহিলার আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়। এর পর এই মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে।

শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোনও মহিলা বিয়ের আগে, বিয়ের সময় এবং বিয়ের পরে উপহার হিসাবে যে গয়নাগাটি পান, সেগুলি তাঁর ‘স্ত্রীধন’। বিয়ের পর সেগুলি স্বামী এবং স্ত্রীর যৌথ সম্পত্তি হয়ে যায় না। গয়নার উপর ওই মহিলার নিরঙ্কুশ আধিপত্য রয়েছে। স্বামী তাঁর প্রয়োজনে স্ত্রীর গয়না ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সেই গয়না আবার ফিরিয়ে দেওয়া স্বামীর নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

আদালত জানিয়েছে, মহিলার যে পরিমাণ গয়না তাঁর স্বামী নিয়ে নিয়েছিলেন, ২০০৯ সালে তার বাজারমূল্য ছিল ৮ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার ভিত্তিতে ব্যক্তিকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে স্ত্রীর হাতে তুলে দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.