পরনে সাদা জামা, লম্বা চেহারা। বাইক সওয়ারি নয়, বিজেপি কার্যালয়ের পাশেই একটি চায়ের দোকানের আড়ালে দাঁড়িয়েছিল। টিটাগড়ের বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ শুক্লার (Manish Shukla) দেহ গুলিতে ঝাঁজরা করে দিয়েছিল এই ব্যক্তিই। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে, তা ভালভাবে পরীক্ষা করার পর এমন তথ্যই পাচ্ছেন সিআইডি’র তদন্তকারীরা। কে এই ব্যক্তি, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টা চলছে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে।
রবিবার মণীশ শুক্লার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সোমবারই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি’র (CID) হাতে তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত সন্দেহে ২ জনকে গ্রেপ্তার করে খানিকটা গতি এনেছেন আধিকারিকরা। সংগ্রহ করা হয়েছে সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজও। আর তা খতিয়ে দেখতে গিয়েই কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করে চমকে উঠছে দুঁদে গোয়েন্দার দল।
ফুটেজ পরীক্ষা করে বোঝা যাচ্ছে, কোনও বাইক সওয়ারি নন, মণীশ শুক্লাকে প্রাথমিক আঘাতের পর উচ্চমানের বন্দুক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুঁড়েছে যে ব্যক্তি, সে আসলে টিটাগড় থানার উলটোদিকে বিজেপি কার্যালয়ের পাশে চায়ের দোকানে ঘাপটি মেরে ছিল। ওইদিন সন্ধেবেলা বারাকপুরের দিক থেকে ২টি বাইকে চড়ে আততায়ীরা এসে প্রথমে গুলি চালিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে। ভয় পেয়ে যান মণীশকে ঘিরে থাকা দলের কর্মী, সমর্থকরা। মণীশ নিজেও ভয় পেয়ে রাস্তায় দাঁড়ানো তাঁর গাড়ির সামনে মাটিতে পড়ে যান।
এরপরই ফুটেজে দেখা যায়, পাশের চায়ের দোকান থেকে সাদা জামা পরা, লম্বা চেহারার এক ব্যক্তি বেরিয়ে মণীশ শুক্লার উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে। গুলি চালাতে চালাতেই সে একটি বাইকে চড়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে শ্যামবাজারের দিকে। এই ফুটেজ থেকে তদন্তকারীরা একটা বিষয়ে স্পষ্ট, বন্দুকবাজ মণীশ শুক্লার আশেপাশেই ওইদিন ছিল, আড়ালে থেকেই কড়া নজর রাখছিল তাঁর গতিবিধির দিকে। আর ওই এলাকাজুড়ে নিজেদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে খবরাখবর দেওয়ানেওয়া করছিল আততায়ীরা। শেষ পর্যন্ত মোক্ষম সুযোগ পেতেই সবুজ সংকেত মেলে। অতর্কিতেই হামলা চলে মণীশের উপর।
কে এই সাদা জমা পরা বন্দুকবাজ? সেটাই এখন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তবে ধৃত ব্যবসায়ী মহম্মদ খুররম অর্থাৎ যে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে বিজেপি নেতাকে হত্যার ছক কষেছে বলে মনে করা হচ্ছে, পরিকল্পনার ব্লু প্রিন্ট তারই, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া আর কিছুটা সময়ের অপেক্ষা।