একদিকে চুক্তিভঙ্গ করে অগ্রিম না দেওয়ার অভিযোগ, অন্যদিকে চুক্তির বাইরে গিয়ে অগ্রিমের বদলে পুরো বেতন। শাসদলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে চুক্তিকেই অস্বীকারের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠছে দুর্গাপুরের বেসরকারি কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। লকউনের সময় বেসরকারি কারখানাগুলির এই আচরণ ঘিরে বিভ্রান্তি শ্রমিক মহলে। ক্ষোভ বাড়ছে শাসকদলের উপরও।
গত ১৮ মে দুর্গাপুরে উপ শ্রম কমিশনারের দপ্তরে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি ও বেসরকারি কারখানার মালিক সংগঠনের সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রত্যেক শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা অ্যাডভান্স দিতে হবে। ২৫ মে’র মধ্যে অ্যাডভান্সের টাকা দিয়ে দিতে হবে শ্রমিকদের হাতে। এই চুক্তিকে শ্রমিকদের সঙ্গে শাসকদলের বিশ্বাসভঙ্গতার অভিযোগ তুলে সরব হয় বাম শ্রমিক সংগঠন সিটু। কিন্তু এই চুক্তির পরেও জেলার বহু বেসরকারি কারখানা ৫ হাজার টাকা অ্যাডভান্সের বদলে পুরো মাসেরই (এপ্রিল) বেতন দিয়েছে। আবার বহু কারখানা চুক্তি অনুযায়ী সেই অ্যাডভান্স নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও দেয়নি। এই দুই বিপরীত চিত্রে তুমুল বিভ্রান্ত শ্রমিকরা।
কাঁকসায় পাশাপাশি দুটি লৌহ ইস্পাত কারখানাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিক মহলে বিভ্রান্তির সঙ্গে সঙ্গে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতি চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। জেলায় বাম শ্রমিক সংগঠন সিটুর অন্যতম সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “ লকডাউনের সময় পুরো মাসেরই বেতন দিতে হবে, এই দাবিতে আমরা চেয়েছিলাম সমস্ত শ্রমিক সংগঠনই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াক। কিন্তু রাতের অন্ধকারে এই চুক্তি করে শ্রমিকদের সঙ্গে শুধু বিশ্বাসঘাতকতাই করেনি শাসকদল,তাঁদের শ্রমেরও মর্যাদা দেয়নি তারা। আমাদের চাপে বেশ কিছু কারখানা পুরো বেতন দিতে বাধ্য হয়েছে।” আইএনটিটিইউসির জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন দাশুর কথায়, “ ওই চুক্তি অনুযায়ী বহু কারখানাই এখনও
বেতন দেয়নি। লকডাউন মিটলেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।” বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর তো শুরু হয়েছে। তবে এসবের মাঝে পড়ে একদল শ্রমিকের হাত তো একেবারেই শূন্য। তাঁরা না পেয়েছেন বেতন, না অগ্রিম। তাঁদের সুরাহা কবে হবে?