বাম“ (Left) শব্দটি কোন নির্দিষ্ট চরিত্র লক্ষণ নয় । রামধনু যেমন বিভিন্ন বর্ণালীর সমাহার , ব্যাকটিরিয়ার যেমন নানান বৈচিত্রের স্পেকট্রাম থাকে , “বাম” শব্দটিও তেমন-ই । – বিচিত্র এবং বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের এক কালেকটিভ নাউন । প্রজাতি ভেদে , ব্যাকটিরিয়ার মতই এদের ভিরুলেন্স ( ক্ষতি করার ক্ষমতা ) বিভিন্ন হয় । এই গবেষণামূলক নিবন্ধে সেই বর্ণচ্ছটার বিশ্লেষণের চেষ্টা করা হয়েছে । অনুধাবন করুন । –

১) নাতি (ন – অতি ) বাম – কিছু ব্যাকটিরিয়া যেমন শরীরে এমনিতেই থাকে , কোন ক্ষতি করে না , বরং মাঝেসাঝে উবগার করে , এরা তেমনি । আপনার পাশের বাড়ির দাদাটি এই নাতি বাম । গোবেচারা ভালোমানুষ , – কি কুক্ষণে যেন এক ঘোর বামফণ বাড়ির মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন , এখন শুধু শয্যাসুখ অক্ষুন্ন রাখার জন্য বামফণকে ভোট দেন , এর বেশি কিছু নয় । এঁকে সহানুভুতির নজরে দোখুন । বিয়ে করেও আত্মনির্ভর হওয়া খুব একটা কাজের কথা নয় ।

২) পাতি বাম – হ্যাঁ , এদের ভিরুলেন্স অবশ্যই আছে । কিন্তু আপনি যতটা মনে করেন ততটা নয় । ধরুন , আমাশার অ্যামিবার মত । বিরক্ত করে যথেষ্ট , কিন্তু গোটাকয় ট্যাবলেটেই ঠান্ডা । – পাশের পাড়ার সেই কবিটি । বাড়িতে লক্ষীপুজো করে , টিভিতে তার সম্প্রচার করার ব্যবস্থা করে গদগদ হয় , আবার ত্রিশুলে কন্ডোম পরানোর বাসনাও প্রকাশ করে ! – দুচার ঘা জুতোপেটা করুন , এর বেশি কিছু করবেন না । ওর কথাটাও ভাবুন ! বেচারা যা কিছু করে, তা পেটের দায়ে । যা বিদ্যেবুদ্ধি , নিজের এলেমে হাঁড়ি চড়বে কিনা সন্দেহ , এ ছাড়া কি আর করবে ও ? – বাঁদর কি নিজের ইচ্ছেয় নাচ দেখায় ? – মালিক নাচায় তাই নাচে ।

৩) কচি বাম – এদের ব্যাপারে একদম উল্টো । আদপেই অবহেলা করবেন না । সাপের বাচ্চা সাপই হয় । বিষদাঁত থাকে জন্ম থেকেই । নিজের গর্ভধারীনীর সাথে লিপলক করে বিষ সংগ্রহ করে এরা । যত দিন যাবে , তত বাড়বে বিষ । এদের বাপেদের ইতিহাস দেখুন , – মিল পাবেন । সুতরাং উপেক্ষা করবেন না ।

৪) দরকচা বাম -এই বামের ঝুড়িটা বড় বিচিত্র । আম থেকে আমড়া , মজা কাঁঠাল থেকে গাঁজা তাল , – সব পাবেন এতে । পচে যাওয়া কামরাঙা কবি পাবেন , দুষ্টভৃতির নষ্ট লেখক পাবেন , পাবেন আত্মবিক্রীত পুরাণবিদ ও । এছাড়া বহুজনবল্লভা পরমা স্বৈরিনী , এমনকি ওই কচি বামের হাজা বাপেরা তো আছেই ! এরা পোটেনসিয়ালি ডেঞ্জারাস , তবে ওই সোস্যাল ডিস্ট্যানসিং রক্ষা করলেই এদের ক্ষতি করার ক্ষমতা শেষ । ডানা দিন দিন ক্ষয়ে আসছে তো , তাই বেশিদূর উড়তে পারে না ।

৫) ক্ষতি বাম – নামেই মালুম , এরা যথেষ্ট ক্ষতিকর । তার একটা প্রধান কারণ , এরা নিজেদের বাম বলে পরিচয়-ই দেয় না । উল্টে একটা বিরাট অংশ নিজেদের বাম বিরোধী বলে জাহির করে । এইটাই এদের কামোফ্লাজ ! এরা সর্প-সহবাসী , অন্তস্থল থেকে যাবতীয় বাম বদগুণের অধিকারী , স্বয়ং চ্যাংমুড়ি কানী এদের আরাধ্যা । অখন্ড সর্পরাজ্য স্থাপন এদের গোপন এ্য়াজেন্ডা । প্রতিনিয়ত এরা সংখ্যাবৃদ্ধি করছে । অতএব , সাধু সাবধান ।

৬) বিধি বাম – এই নামকরণ হয়েছে “ বিশেষভাবে ধিকৃত বাম “ থেকে । এই একটিমাত্র বাম প্রজাতি সম্বন্ধে বলা যায় , অধুনা এরা নখদন্তহীন হয়েছে । এককালে কালচার মিডিয়ায় গিজগিজ করত এরা , এখন ৭% কলোনীও দেখা যায় না । এখন এরা এতটাই শক্তিহীন যে সমাজবিজ্ঞানীরা এদের থেকে অ্যাটিনিউয়েটেড অ্যান্টি বাম ভ্যাকসিন তৈরী করার কথা ভাবছেন । তবু , ওঝারা বলে , শনি-মঙ্গলবারে ঢোঁড়া সাপেরও নাকি বিষ হয় ! তাই , সাবধানের মার নেই !

৭) অতি বাম – সংখ্যায় কম বলে এদের হেলাফেলা করবেন না । সারা ভারতব্যাপী ছোট ছোট বাঙ্কারে এরা ঘাঁটি গেড়ে আছে । ডলার , পেট্রোডলার সমৃদ্ধ এরা , পুলিত্জার , বুকার , ম্যাগসেসে এদের চোরাই রসদ জোগায় । এরা সাক্ষাত্ রক্তপায়ী ড্রাকুলার নবমূর্ত্তিপরিগ্রহ । এদের পোষা নেকড়েরা মিডিয়া হাউলার্স । পূর্ণিমা রাতে এই নেকড়েদের ঊর্দ্ধমুখ চীত্কার শোনা যায় । এই নেকড়েরাই ড্রাকুলার রক্ষক , তাই যুদ্ধনীতি বলে , আগে নেকড়ে বধ , তারপর ড্রাকুলার বক্ষভেদ । সুসংবাদ , – বাঙলার নেকড়ের তেজ নাকি ক্রমক্ষীয়মান ।

৮) অতি অতি বাম – এরা ফ্রাস্টু বাম নামেও পরিচিত । বস্তুতঃ এরা অতিবাম বংশের বিকলাঙ্গ সন্তান । বিকৃত জীবনযাত্রায় জেনেটিক মিউটেশনের ফল । জেনেটিক বিকৃতির জন্য এদের চলাফেরাও কম । ফেসবুক – সোস্যাল মিডিয়ায় লম্ফঝম্ফ দেখানোই এদের জনমনোরঞ্জক কীর্তিকলাপ । কিডনি বিকল হওয়া রুগীর ডায়ালিসিসের মত সিগারেটে গাঁজা পুরে কিছু সময় অন্তর অন্তর রক্তে না প্রবাহিত করলে এদের বেঁচে থাকা অসম্ভব । ….

এত বিবরণ পড়তে পড়তে আপনি কি খেয়াল করেছেন , বাম স্পেক্ট্রামটি প্রায় একশো আশি ডিগ্রী ঘুরে গেছে ?
তাই বিকলাঙ্গ বিকৃতমনা ফ্রাস্টু অতি অতি বামটি যখন তার গঞ্জিকার রসদ প্রার্থনায় তার ডান দিকে হাত বাড়ায় , অবাক বিস্ময়ে আমরা লক্ষ্য করি , সেখানেই দক্ষিনাবর্তের শুরু ! সেখানে উপবিষ্ট এক ভষ্মমাখা সাধুবাবা । সবল তিনি । তাঁর টানে কলকের মাথায় জ্বলে ওঠে অগ্নিশিখা । হেলায় কিছু উচ্ছিষ্ট গঞ্জিকা তিনি ছুঁড়ে দেন ফ্রাস্টুকে , তারপর উঠে দাঁড়ান । হাতে নেন ত্রিশুল । বাম-সংহার অভিযান বোধহয় সমাসন্ন ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.