উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার সুকান্ত মজুমদারের প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিন্তু এবার তার মধ্যেই ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ লোকসভায় জনবিন্যাসের বদল ঠেকাতে ও হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে বাংলা ও বিহারের ৫ জেলা নিয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি তুললেন সংসদে। আর এই নতুন প্রস্তাবে রাজ্য ভাগের বিতর্কে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে জনবিন্যাসে ভারসাম্য বজায় রাখতে বাংলার মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলাকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করে দেওয়া হোক বলে দাবি তুলেছেন। এর সাথে বিহারের কিশানগঞ্জ, আড়াড়িয়া, কাটিহার জেলাকেও যুক্ত করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির দাবি করেছেন।
নিশিকান্ত দুবে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদ। এই নিশিকান্তই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলেছিলেন। লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল মহুয়াকে। এবার সেই নিশিকান্তই লোকসভাতে বাংলা ও বিহারে পাঁচটি মুসলমান প্রধান জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি তুললেন। বৃহস্পতিবার লোকসভার জিরো আওয়ারে বাংলা ও বিহারের উল্লিখিত জেলাগুলিতে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের কারণে জন বিন্যাস বদলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নিশিকান্ত দুবে। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ওই জেলাগুলিকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে এনআরসি কার্যকর করার উদ্যোগ নিক কেন্দ্র সরকার।
তাঁর দাবি, ঝাড়খন্ডে আদিবাসী জনসংখ্যা ১০% কমে গিয়েছে। বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে আদিবাসী মহিলাদের বিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, আমি সাঁওতাল পরগনা থেকে এসেছি। যখন বিহার থেকে ভেঙে ঐ এলাকাকে ঝাড়খন্ডে যুক্ত করা হয় তখন আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল ৩৬ শতাংশ, এখন তা ২৬ শতাংশ হয়ে গেছে। আর এটা হয়েছে ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির কারণে। জেএমএম সরকার কোনো পদক্ষেপ না করায় আমাদের এলাকায় বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই অভিযোগ করার পাশাপাশি নিশিকান্তবাবু আরো বলেন, মুর্শিদাবাদ ও মালদা থেকে লোক এসে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। ঝাড়খন্ড পুলিশ কোনো কাজ করছে না। আমার অনুরোধ, মালদা, মুর্শিদাবাদ, আড়ারিয়া কিশানগঞ্জ এবং কাটিহার নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হোক, নইলে হিন্দু আর থাকবে না। এনআরসি চালু করুন। কিছু করতে না পারলে আগে কমিটি পাঠান। ধর্মান্তকরণ এবং বিবাহের ক্ষেত্রে অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হোক।
বাংলার তৃণমূল সরকারের নাম উল্লেখ করে নিশিকান্তবাবু বলেন, বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ সুনিশ্চিত করতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ মালদা ও মুর্শিদাবাদের গ্রামের পর গ্রাম খালি করে দিচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁর বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হলে তিনি পদত্যাগ করতেও তৈরি।