সংসদে রাহুল গান্ধী ও মহুয়া মৈত্রের বক্তব্যের প্রভাব টের পাওয়া গেল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। বুধবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে, কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের কড়া ভাষায় নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু তাই নয়, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগের এক দশককে দুর্নীতি ও হিংসার দশক বলে উল্লেখ করেন। তবে বিরোধীদের প্রতি তাঁর সবচেয়ে শক্তিশালী তির ছিল, ইডি নাকি বিরোধীদের একছাতার তলায় এনে দিয়েছে।
লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, দেশের ভোটদাতার যা পারেননি তা করে দেখিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট। তারা এক ছাতার তলায় এনে দিয়েছে বিরোধীদের। সমালোচনা গণতন্ত্রের অঙ্গ। কিন্তু এখানে শুধু কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে, রিজার্ভ ব্য়াঙ্ককে, সেনাকে গালাগালি করছে বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, দেশের একাধিক রাজ্যে বিভিন্ন দুর্নীতিতে সক্রিয় সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। পশ্চিমবঙ্গে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, গোরু পাচার দুর্নীতির মতো বিষয়গুলি নিয়ে সক্রিয় দুই তদন্ত সংস্থা। সেই তদন্তের জেরে বাংলার মন্ত্রী, তৃণমূল নেতা, শিক্ষা দফতরের আধিকারিরা এখন জেল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে যে বিষয়টি নিয়ে রাহুল গান্ধী বা মহুয়া মৈত্র সংসদে সরব হয়েছিলেন সেই শিল্পপতি গৌতম আদানিকে নিয়ে মুখে কুলুপ প্রধানমন্ত্রীর।
নরেন্দ্র মোদী এদিন তাঁর ভাষণে বলেন, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইপিএ জমানায় দেশের অর্থনীতির রক্তক্ষরণ হয়েছে। ওই সময়ে টানা এক দশক দেশের একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে, হিংসা হয়েছে, হাতের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার যে সুযোগ এসেছে তাকেই দুর্নীতিতে পরিণত করেছে তত্কালীন সরকার।
ইউপিএ জমানার শেষ দিকের অংশ অর্থাত্ ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালকে হতাশার বছর বলে কংগ্রেসকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওই সময়টা সাংঘাতিক হতাশার সময়। তাই তারা এখন দেশের উন্নতি চোখে দেখতে পারেন না বিরোধীরা। ২০১৪ সালের আগে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ছিল খুবই বেশি। এমনকি তা ছিল স্বাধীনতার পর থেকে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। ইউপিএ জমানার শেষ ১০ বছর কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত জঙ্গিদের রমরমা ছিল। সেইসময় গোটা দুনিয়ার সামনে ভারত এতটাই দুর্বল ছিল যে বিশ্বের কোনও দেশ ভারতকে আমল দিত না। বিরোধীরা বলে ভারতের ধ্বংস এক সময় হার্ভাডে আলোচনার বিষয় হবে। কিন্তু গত কয়ে বছরে হার্ভাড একটা বিষয় ঠিক করে ফেলেছে। তা হলে কংগ্রেসের উত্থান ও পতন।
উল্লেখ্য, গতকালই সংসদে মোদী ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানিকে নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তিনি অভিযোগ করেন, গৌতম আদানির সম্পত্তি বাড়ার পেছনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত রয়েছে। ভারতে রাজনীতি ও শিল্পপতিদের সম্পর্কের উপরে এবার নজর দেওয়া উচিত হার্ভাডের। আর এর জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে গোল্ড মেডেল দেওয়া উচিত।