সোমবারই রাশিয়া উড়ে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দিনের সফর শেষে রাশিয়া থেকে যাবেন অস্ট্রিয়াতেও। তার পর ১০ জুলাই সেখান থেকে দেশে ফিরবেন তিনি। ২২তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতেই যাচ্ছেন মোদী। সেই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সারবেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও। কূটনৈতিক মহলের মতে, দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে প্রতিরক্ষা সমঝোতার বিষয়গুলি উঠে আসতে পারে মোদী-পুতিনের আলোচনায়।
তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন মোদী। শুধু তা-ই নয়, ২০২২ সাল থেকে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে মোদীকে রাশিয়া যেতে দেখা যায়নি। সে দিক থেকে এই সফর খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান-সহ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির তিরস্কার শুনতে হয়েছে রাশিয়াকে। এমনকি, বহু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। তবে আমেরিকার চোখরাঙানি থাকার পরেও রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চায়নি ভারত।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে সে ভাবে সরব হয়নি ভারত। এমনকি, রাষ্ট্রপুঞ্জেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও শব্দ খরচ করেনি তারা। এমনকি সম্প্রতি সুইৎজ়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে যোগ দিলেও রাশিয়া বিরোধী প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেনি ভারত। কূটনৈতিক মহলের মতে, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ব্যবসায়িক সম্পর্ক সুমধুর। তেল, কয়লা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম, রাশিয়া থেকে আমদানি করে ভারত।
মোদীর সফরে তাই ইউক্রেন যুদ্ধ বড় ভূমিকা নেবে বলে মনে করছেন অনেকেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর রুশ সফর নিয়ে শনিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেসকোভ বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর এই সফর দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মস্কোয় মোদীর অনুষ্ঠান সাড়া ফেলবে।’’
প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসেই মোদীকে রাশিয়া যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় মস্কোর তরফে। তবে তার পরই লোকসভা ভোট এসে পড়ে। তাই রাশিয়া যাওয়া হয়নি মোদীর। ভোট মেটার পরই শুরু হয় মোদীর রাশিয়া সফরের তোড়জোড়। শেষ বার মোদী রাশিয়া গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। তার পাঁচ বছর পর আবার রুশ সফর করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তবে ২০২২ সালে উজবেকিস্তানে, এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে পার্শ্ববৈঠকে মোদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন পুতিন।
বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রার কথায়, ‘‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে পাল্লা অত্যন্ত বেশি রকম রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে রয়েছে। বিপুল পরিমাণ তেল সে দেশ থেকে আমদানি করার ফলে ভারসাম্য আরও কমছে। সেই পাল্লা কী ভাবে সোজা করা যায়, সে দিকে জোর দেবেন মোদী।’’ তাঁর এই সফরের দিকে নজর থাকবে আমেরিকারও।