মণিপুরের উখরুল জেলার অন্তর্গত শিরুই পাহাড়ের চূড়া প্রচণ্ড দাবানলে জ্বলছে। আগুন নেভাতে রাজ্য প্রশাসনের ডাকে নিয়োগ করা হয়েছে ন্যাশনাল ডিজেস্টার রেসপন্স (এনডিআরএফ)-এর একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি এবং হাই-টেক স্পেশালিস্ট (উচ্চ প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞ) বাহিনীর ১২টি ব্যাটালিয়ন। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে দাবানলকে নিয়ন্ত্রণ করতে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষ বামবি বালতি সজ্জিত দুটি এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টার পাঠিয়েছেন।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রী নংথমবাম বীরেন সিংহ জানান, ঘটনা সম্পর্কে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবগত করা হয়েছে। প্রচণ্ড দাবানলকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা চেয়ে তিনি কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে। কেন্দ্ৰীয় সরকারের সহায়তা চেয়ে জরুরি চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর সর্বতোপ্রকারের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। কেন্দ্রের নির্দেশে সকাল থেকে ন্যাশনাল ডিজেস্টার রেসপন্স-এর সুসজ্জিত ১২টি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
ইত্যবসরে দাবানলের ভয়ংকর রূপ দেখে শিলঙে ভারতীয় বায়ুসেনার ইস্টার্ন কমান্ডের সহায়তা চাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে শিলং থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার বামবি বালতি সজ্জিত দুটি এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টার এসে দাবানল নিয়ন্ত্ৰণে আনতে ঝাঁপিয়েছে। আগুনের বিস্তৃতি এখনও ঘটছে, জানান উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ।
এদিকে শিলঙে অবস্থিত ভারতীয় বায়ুসেনার ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড বেলা ১.১৮ মিনিটে তাঁদের অফিশিয়াল ট্যুইটে লিখেছেন, মণিপুর সরকারের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে বামবি বালতি সজ্জিত দুটি এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টার উখরুল জেলার অন্তর্গত শিরুই পাহাড়ের দাবানল নেভাতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে আজ উখরুলের জেলাশাসক জানান, গত ২৫ মাৰ্চ শিরুই পাহাড়ের ঘন জঙ্গলে আচমকা দাবানলের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থল পশ্চিম ইমফল জেলা থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার এবং উখরুল সদর থানা থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে। তবে স্বস্তি এটাই, দাবানলের গ্রাসে আক্রান্ত শিরুই পাহাড়ের আশপাশে কোনও জনবসতি গ্রাম বা বস্তি নেই। যা আছে তা প্রায় ১০ কিলেমিটার দূরে। দাবানলের ভয়াবহতা গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। দূরন্ত গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। তবে বায়ুসেনার দুটি হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে, জানান জেলাশাসক।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নাগাল্যান্ড ও মণিপুর সীমান্তে অবস্থিত পরিবেশগত দিক থেকে অতি সংবেদনশীল জুকৌ ভ্যালি বিধ্বংসী দাবালনের শিকার হয়েছিল। আগুনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জুকৌ ভ্যালি। ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে মণিপুর ছাড়াও অসম, নাগাল্যান্ড থেকে এনডিআরএফ-এর মোট ৪৮টি বাহিনী পাঠানো হয়েছিল। অগত্যা শিলং থেকে মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি ও হাই-টেক স্পেশালিস্ট বাহিনীর বামবি বালতি সজ্জিত দুটি এমআই-১৭ভি৫ হেলিপ্টার এবং একটি এসি-১৩০জে হারকিউলিস এয়ারক্র্যাফ্ট নিয়ে বিশেষ দল আসে। সম্মিলিত উদ্যোগে প্রায় দেড় মাস পর জুকো ভ্যালির আগুন নেভানো হয়েছে।
2021-03-29