রাত পোহালেই ভোট, আঁটসাঁট নিরাপত্তা, প্রথম দিনের ‘অগ্নিপরীক্ষা’ দিতে কতটা প্রস্তুত কমিশন

রাত পোহালেই লোকসভা নির্বাচন। দেশের ২১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে শুক্রবার। তার মধ্যে বাংলার তিনটি কেন্দ্র রয়েছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি এই তিন কেন্দ্রের নির্বাচনের নিরাপত্তার জন্য রাজ্য পুলিশের উপরেও আস্থা রেখেছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কোচবিহারে মোট বুথের সংখ্যা ২,০৪৩টি। এ ছাড়া জলপাইগুড়িতে ১,৯০৪টি এবং আলিপুরদুয়ারে ১,৮৬৭টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। প্রথম দফার এই তিন কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৫৬ লক্ষ ২৬ হাজার ১০৮ জন। এঁদের মধ্যে ৮৫ বছরের বেশি বয়সি ভোটার রয়েছেন প্রায় ২৭ হাজার।

প্রথম দফার নির্বাচনে তিন ধরনের ভোট পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে কমিশন। কোচবিহারে সাধারণ পর্যবেক্ষক হলেন রবিকুমার সুরপুর (আইএএস)। এ ছাড়া জলপাইগুড়িতে সুধাংশুমোহন সমল (আইএএস) এবং আলিপুরদুয়ারে পাটিল যালাগৌদা শিবাংগৌদাকে (আইএএস) সাধারণ পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ পর্যবেক্ষক হিসাবে থাকছেন কুমার বিশ্বজিৎ (আইপিএস)। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ পর্যবেক্ষক পুনীত রাস্তোগি (আইপিএস) এবং জলপাইগুড়ির পুলিশ পর্যবেক্ষক সিএস রাও (আইপিএস)। এ ছাড়াও প্রথম দফার ভোটে ব্যয় পর্যবেক্ষক হিসাবে তিন কেন্দ্রে তিন আধিকারিককে নিয়োগ করেছে কমিশন। তাঁরা হলেন কোচবিহারে সঞ্জয় কুমার (আইআরএস), আলিপুরদুয়ারে সালুনকে দুর্গেশ যাদব (আইআরএস) এবং জলপাইগুড়িতে মদনমোহন মিনা (আইআরএস)। তিন কেন্দ্রে প্রায় ৭০০ জন ক্ষুদ্র পর্যবেক্ষককেও (মাইক্রো অবজ়ারভার) নিয়োগ করা হয়েছে।

ভোটের আগে তিন কেন্দ্রে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় থাকবে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি)। কোচবিহারে ৪৭টি, আলিপুরদুয়ারে ২৩টি, জলপাইগুড়িতে ১৩টি, শিলিগুড়িতে তিনটি কিউআরটি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তিন কেন্দ্রে রাজ্য পুলিশের মোট ১২,৩১০ জন কর্মীকে নিযুক্ত করেছে কমিশন। এঁদের মধ্যে সশস্ত্র পুলিশ এবং লাঠিধারী পুলিশ থাকবেন। এ ছাড়াও কিছু পুলিশ কর্মী থাকবেন কাঁদানে গ্যাস নিয়ে। ভোট চলাকালীন কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে দিকে লক্ষ রাখবেন তাঁরা। প্রয়োজনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে পারবে পুলিশ।

কমিশন জানিয়েছে, শুক্রবার রাজ্যের ১০০ শতাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বুথে বুথে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার ‘ওয়েব কাস্টিং’ হবে। অর্থাৎ, কোন বুথে কী ভাবে ভোট চলছে, কলকাতার কন্ট্রোল রুমে বসেই দেখতে পাবেন কমিশনের আধিকারিকেরা।

কোচবিহার থেকে এ বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিদায়ী সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককেই আবার টিকিট দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের টিকিটে ওই কেন্দ্রে লড়বেন জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া। এ ছাড়া কোচবিহারে কংগ্রেসের প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরী এবং ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী নীতীশচন্দ্র রায়। জলপাইগুড়িতে এ বার নির্মলচন্দ্র রায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বিজেপি থেকে টিকিট পেয়েছেন জয়ন্ত রায়। এ ছাড়া ওই কেন্দ্রে সিপিএমের হয়ে লড়বেন দেবরাজ বর্মণ। আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইক। বিজেপি টিকিট দিয়েছে মনোজ টিগ্গাকে। আলিপুরদুয়ারে বামেদের আরএসপি প্রার্থী হলেন মিলি ওরাওঁ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.