ভোটার তালিকায় নাম উঠল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রাচীন জনগোষ্ঠী জারোয়াদের। এই প্রথম ভোটাধিকার পেলেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে ১৯ জন জারোয়া জনগোষ্ঠীভুক্তের নাম ভোটার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। আগামী দিনে এই সম্প্রদায়ের বাকিদেরও দেশের গণতন্ত্রে শামিল করা যাবে, আশাবাদী প্রশাসন।
মূলত দক্ষিণ আন্দামানে জারোয়াদের বাস। সেখানকার জিরকাটাং গ্রামের ১৯ জন বাসিন্দা বৃহস্পতিবার ভোটাধিকার পেয়েছেন। বুথস্তরের আধিকারিকের কাছে ফর্ম-৬ জমা দিয়েছেন তাঁরা। আগামী নির্বাচনেই তাঁরা অংশ নিতে পারবেন। জারোয়াদের ভোটাধিকার প্রদানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্দামান ও নিকোবর প্রশাসনের মুখ্যসচিব কেশব চন্দ্র। জারোয়াদের গ্রামে গিয়ে তিনি নিজে ওই গোষ্ঠীর এক সদস্যের হাত থেকে প্রথম ফর্মটি সংগ্রহ করেছেন। ভোটার তালিকায় জারোয়াদের অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় গণতন্ত্রের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে, দাবি আধিকারিকদের।
ভারতের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলিকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যে শামিল করার প্রচেষ্টা দীর্ঘ দিনের। তবে এই প্রক্রিয়ায় তাদের নির্দিষ্ট সংস্কৃতি এবং জীবনধারাকে অক্ষুণ্ণ রাখাও অত্যন্ত জরুরি। গণতন্ত্রে আদিবাসী গোষ্ঠীগুলিকে যুক্ত করতে গিয়ে কোনও ভাবেই যাতে তাদের ভাবাবেগে, আজন্মলালিত সংস্কারে আঘাত না লাগে, সে দিকে খেয়াল রাখছেন সরকারি আধিকারিকেরা। দক্ষিণ আন্দামানের জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অর্জুন শর্মা বৃহস্পতিবার ভোটার তালিকায় জারোয়াদের নাম নথিভুক্তকরণের প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করেছেন। ওই গোষ্ঠীর স্বাতন্ত্র্য, গোপনীয়তা এবং ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীলতার সঙ্গে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন তিনি।
জারোয়াদের ভোটাধিকার প্রদানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আন্দামান আদিম জনজাতি বিকাশ সমিতি এবং জনজাতি উন্নয়ন দফতর। ভোট প্রক্রিয়া সম্পর্কে, গণতন্ত্রে এর গুরুত্ব সম্পর্কে জারোয়াদের বিস্তারিত বুঝিয়ে বলা, তাদের ভোট দিতে শেখানো প্রভৃতি কাজে সাহায্য করেছে তারা। মুখ্যসচিব কেশব এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এটি উল্লেখযোগ্য একটি প্রাপ্তি। জারোয়া এবং অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে আপস না করে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দিতে সরকার কতটা উৎসাহী, এই পদক্ষেপ সেটাই প্রমাণ করে।’’