রাজভবনে আটকে থাকা ‘হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল, ২০২১ অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি’-সহ দু’টি বিলে অবশেষে সম্মতি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত বিল ছাড়াও ‘পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন (সংশোধনী) বিল ২০১৮’-য় সই করেছেন।
ঘটনাচক্রে, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের এক মাস পূরণের আগেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দু’বার রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিলে অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল। ওই পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালের ঝুলিয়ে রাখা ‘বৈধ’ নয়। এর আগে মঙ্গলবার রাজ্যপাল বোস ‘পশ্চিমবঙ্গ শহর ও দেশ (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) (সংশোধনী) বিল ২০২৩’, ‘পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার ও প্রজাস্বত্ব ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) বিল ২০২২’, ‘পশ্চিমবঙ্গ কর ট্রাইব্যুনাল (সংশোধনী) বিল ২০২২’ অনুমোদন করেছিলেন।
পাশাপাশি, রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশন (সংশোধন) বিল ২০২৫’ পেশ করার সুপারিশ করেছিলেন রাজ্য সরকারের কাছে। প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ু বিধানসভায় পাশ হওয়া ১০টি বিলে সে রাজ্যের রাজ্যপাল সম্মতি না-দেওয়ায় সেগুলি আইনে পরিণত করতে পারছিল না সে রাজ্যের সরকার। রাজ্যপালের ওই ভূমিকার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। গত ৮ এপ্রিল বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চে প্রশ্নের মুখে পড়েন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি। শীর্ষ আদালত জানায়, অনন্তকাল ধরে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল ঝুলিয়ে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল।
ওই মামলায় সময়সীমা বেঁধে দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। এক ভাবে রাষ্ট্রপতিও অনির্দিষ্ট কাল ধরে বিল আটকে রাখতে পারেন না বলে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এর পরেই রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে আটকে থাকা বিলগুলি দ্রুত অনুমোদনের দাবি তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এটা নিয়ে আমাদের রাজ্যপালকে আমরা বলেছি বার বার। ২০১৬ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলের মধ্যে এমন ২৩টি বিল রয়েছে, যেগুলিতে সম্মতি দেননি রাজ্যপাল। এগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিলও রয়েছে। কেন এই বিলগুলিতে রাজ্যপাল সম্মতি দিচ্ছেন না, তা স্পষ্ট নয়।’’ সেই সঙ্গে বিমান বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয়, মাননীয় রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকে মাথায় রেখে ঝুলিয়ে রাখা বিলগুলি পাঠিয়ে দেবেন।’’ শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল বোস জমে থাকা বিলগুলিকে ছাড়পত্র দেওয়া শুরু করলেন।