আগামী ৪৯ বছরের মধ্যে ভারতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যে ঠেকবে। গ্লাসগোয় জলবায়ু সম্মেলনে এমনই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে আগামিদিনে পৃথিবীকে দূষণ মুক্ত করে তুলতে ‘পঞ্চামৃত’ তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ভারত অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সোমবার জলবায়ু সম্মেলনে মোদী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বব্যাপী চিন্তাভাবনার মধ্যে আমি ভারতের তরফ থেকে পাঁচটি অমৃত তত্ত্ব পেশ করতে চাই। পঞ্চামৃতের উপহার দিতে চাই। প্রথমত, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত অজীবাশ্ম শক্তির পরিমাণ ৫০০ গিগাওয়াটে নিয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, ২০৩০ সালের মধ্যে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়, তার ৫০ শতাংশ পুনর্নবীকরণ শক্তির মাধ্যমে পূরণ করবে ভারত। তৃতীয়ত, এখন থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হতে পারে বলে পূর্বাভাস আছে, তা এক বিলিয়ন টন কম করা হবে। চতুর্থত, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কম করবে ভারত। পঞ্চমত, ২০৭০ সালের মধ্যে ভারত শূন্যের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে ভারত (কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ)। এই পঞ্চামৃতের মাধ্যমে জলবায়ু রক্ষায় অভূতপূর্ণ অবদান রাখবে ভারত।’
কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য ভারতীয় রেলের উপর বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করেছেন মোদী। তিনি জানান, ভারতীয় রেলে কার্বন নিঃসরণের কমানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ‘বিশ্বের মোট জনসংখ্যার থেকেও বেশি মানুষ প্রতি বছর ভারতীয় রেলের মাধ্যমে যাতায়াত করেন। সেই বিশাল রেলের নেটওয়ার্ক ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্য করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। সেই কর্মসূচির ফলে প্রতি বছর ৬০ মিলিয়ন টন নিঃসরণ কমবে।’
তারইমধ্যে জলবায়ু রক্ষা নিয়ে ধনী দেশগুলির ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মোদী।তিনি জানান, জলবায়ুর জন্য যে ভারত-সহ উন্নয়নশীল দেশগুলি যে পরিকল্পনা নিচ্ছে, তা পূরণের জন্য ধনী দেশগুলির থেকে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন আছে। মোদীর কথায়, ‘আপনারা এই সত্যিটা জানেন যে জলবায়ু নিয়ে টাকা দেওয়া নিয়ে এখনও পর্যন্ত যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা ফাঁপা প্রমাণিত হয়েছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সময় যেরকম ছিল, জলবায়ু নিয়ে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি সেরকম থাকতে পারে না।’