তাল কাটল আসানসোলে, ওজনদার আসনে প্রার্থী বাছতে নানা অঙ্ক বিজেপিতে

চোখ খুলে দিয়েছে আসানসোল!

নির্বাচন ঘোষণার আগে বাংলার প্রায় অর্ধেক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিরোধীদের খানিকটা পিছিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তাল কেটেছে আসানসোলে। বিতর্কের মুখে সরে দাঁড়িয়েছেন তারকা প্রার্থী, ভোজপুরি গায়ক-নায়ক পবন সিংহ। যা নিয়ে দৃশ্যত অস্বস্তিতে বিজেপি। দ্বিতীয় দফায় কলকাতা উত্তর-দক্ষিণ, ব্যারাকপুর, দমদম, ডায়মন্ডহারবারের মতো কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলির দিকে নজর থাকে গোটা রাজ্যের। রয়েছে রায়গঞ্জ, দার্জিলিং, বর্ধমান-দুর্গাপুর, মেদিনীপুর আসনও। সন্দেশখালির ঘটনার পরে বসিরহাট আসন নিয়েও চর্চা রয়েছে রাজ্য জুড়ে। কিন্তু এই আসনগুলিতে বিজেপি প্রার্থী করবে কাকে, তা চূড়ান্ত করার আগে বারবার কাটাছেঁড়া চলছে দলের মধ্যে।

দিল্লিতে সোমবার দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেখানে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যোগ দিয়েছিলেন। ছিলেন সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে-সহ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ভার্চুয়াল মাধ্যমে মতামত দিয়েছেন। দিনতিনেকের মধ্যে দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার কথা। তবে বৈঠকের পরে সুকান্ত প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি।

সূত্রের খবর, তিনটি আসন নিয়ে এখনও কোনও রফা-সূত্রে পৌঁছনো যায়নি। যার অন্যতম মেদিনীপুর। বর্তমান সাংসদ দিলীপ ঘোষকে অন্য কোনও ‘নিরাপদ’ আসন বেছে নেওয়ার জন্য রাজ্যের এক শীর্ষ পদাধিকারী পরামর্শ দিয়েছেন বলে একটি সূত্রের খবর। যদিও দিলীপ নিজে মেদিনীপুরে লড়ার জন্য অনড়। প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা না হলেও তিনি জোর কদমে প্রচার চালাচ্ছেন। সূত্রের খবর, তাঁকে প্রার্থী করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিছুটা নিমরাজি। বিভিন্ন সময়ে তাঁর করা বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ‘সুনজরে’ নেই বলেই দলের অভ্যন্তরে খবর। একান্তই তাঁকে প্রার্থী করতে হলে রাজ্যের বাইরে পাঠানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। যদিও দিলীপ বলেন, “আমি মেদিনীপুর থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। এই কেন্দ্রের মানুষের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। এক বছর ধরে সংগঠন তৈরি করেছি। সকলে নির্বাচনে লড়ার জন্য প্রস্তুত।” যদি শেষ পর্যন্ত তাঁকে দল প্রার্থী না করে, সেই প্রশ্নে দিলীপের জবাব, “আমি কখনওই প্রার্থী হতে চাইনি। দল চেয়েছিল, তাই হয়েছিলাম। এখন দল যা চাইবে, তা-ই হবে।” প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত না থাকা প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “ডাকেনি, তাই যাইনি!”

জটিলতা রয়েছে দার্জিলিং আসন নিয়েও। ওই আসনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এক নম্বর পছন্দ এক প্রাক্তন আমলা। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব বর্তমান সাংসদকেই চাইছেন বলে সূত্রের খবর।

দলবদল কিংবা রাজনীতিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন যথেষ্ট শোরগোল। আলোচনার কেন্দ্রে যে চরিত্ররা রয়েছেন, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না, দিলে প্রার্থী হবেন কি না, সে সব নিয়েও আলোচনা চলছে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূল ছেড়ে আসা এক প্রাক্তন বিধায়ক উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হতে চাইলেও ওই কেন্দ্রের জন্য বিজেপির প্রাথমিক ভাবনায় রয়েছে কলকাতার এক কাউন্সিলরের নাম। তিনিই শেষ পর্যন্ত ওখানে প্রার্থী হলে সদ্য তৃণমূলত্যাগী নেতাকে দমদমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। তবে সেখানেও এক প্রাক্তন বিচারপতির নাম প্রাথমিক আলোচনায় আছে। দক্ষিণ কলকাতা আসন থেকে আলোচনায় রয়েছে এক পরিচিত চিকিৎসকের নাম। উলুবেড়িয়ায় বিজেপির এক অভিনেতা-নেতাকে। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে বিরোধী দলনেতার ঘনিষ্ঠ এক বিধায়ক প্রার্থী হতে পারেন। সূত্রের খবর, এক বর্ষীয়ান অভিনেতা ও এক বর্ষীয়ান গায়িকার নাম নিয়েও চর্চা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.