অস্ত্রোপচার সফল না হওয়া মানেই চিকিৎসায় গাফিলতি নয়। সম্প্রতি এক মামলায় এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি পঙ্কজ মিত্তলের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র কোনও রোগী অস্ত্রোপচার বা চিকিৎসায় ঠিক ঠাক সাড়া দেননি বলে, তা চিকিৎসকের গাফিলতি হয়ে যায় না। এর জন্য প্রমাণ দরকার। গাফিলতির অভিযোগের ক্ষেত্রে দেখতে হবে ওই রোগের চিকিৎসার জন্য প্রচলিত রীতির থেকে ভিন্ন কিছু করা হয়েছে কি না।
মামলাটি ১৯৯৬ সালের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ওই বছরে চণ্ডীগড়ের এক হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার সময় রোগী নাবালক ছিলেন। তাঁর পিতার বক্তব্য, চোখের সমস্যার জন্য একটি ছোট অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই সন্তানের চোখে আরও সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন রোগীর পিতা।
প্রথমে অভিযোগ জানিয়েছেন রাজ্যের উপভোক্তা বিষয়ক কমিশনে। কিন্তু সেখানে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ হয়ে গিয়েছিল। পরে জাতীয় উপভোক্তা বিষয়ক কমিশনে অভিযোগ জানান রোগীর পিতা। জাতীয় উপভোক্তা বিষয়ক কমিশন হাসপাতাল ও চিকিৎসক উভয়েরই জরিমানা করে। চিকিৎসকের তিন লাখ টাকা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কমিশনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই মামলায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, “অস্ত্রোপচার বা চিকিৎসায় ক্ষেত্রে সব সময় যে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে তা বলা যায় না। কিংবা অস্ত্রোপচার যে সব সময় সফল হবেই, তা-ও বলা যায় না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা যেতেই পারে। কিন্তু তার মানে চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে, এটা বলা যায় না।”
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি কর্নাটক হাই কোর্টও একটি মন্তব্য করেছে। হাই কোর্টের বিচারপতি পিভি কুনিকৃষ্ণনের বেঞ্চ জানিয়েছে, হেফাজতে নেওয়ার একান্ত প্রয়োজন না হলে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে কোনও নার্সকে গ্রেফতার করা উচিত নয়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নার্সেরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, সে কথাও স্মরণ করিয়েছে কর্নাটক হাই কোর্ট।