যতই জুন-জুলাই জুড়ে ফুটবলপাগল বাঙালিদের চোখ কোপা আমেরিকা (Copa America 2024) ও ইউরো কাপে (UEFA Euro 2024) থাকুক না কেন, শহরের তিন প্রধানও কিন্তু এই সময়ে কলকাতা ময়দানে। ফলে বাংলার ফুটবলেও নজর রাখতেই হবে। মঙ্গল সন্ধ্য়ায় ঢাকে কাঠি পড়ে গেল কলকাতা ফুটবল লিগের (Calcutta Football League 2024)। বলিউডের ডান্স গ্রুপের নাচ, জিৎ গাঙ্গুলির গান ও দুরন্ত লেজার শোয়ে পর্দা উঠল লিগের।
এদিন চব্বিশের সিএফএলের (CFL 2024) উদ্বোধনী ম্য়াচে কিশোর ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মুখোমুখি হয়েছিল বিগত তিনবারের চ্যাম্পিয়ন মহামেডান ও কলকাতা ময়দানে ‘জায়ান্ট কিলার’ হিসেবে পরিচিত উড়াড়ি অ্য়াথলেটিক ক্লাব (Mohammedan Sporting Club vs Wari Athletic Club)। নব্বই মিনিটের লড়াইয়ের পর শেষ হাসি হাসল মহামেডানই। রেড রোডের ধারের ক্লাব দুরন্ত ফুটবল খেলে ৬-০ গোলে হারিয়ে দিল মেয়ো রোডের ক্লাব উয়াড়িকে। ম্য়াচের জোড়া গোল করে করেছেন বাংলার সজল বাগ ও মিজোরামের লালথানকিমা। অপর দুই গোল এসেছে অ্যাশলে আলবান কোলি, থকচম অ্যাডিসন সিংয়ের পা থেকে।
আই-লিগ জিতে আইএসএলে কোয়ালিফাই করেছে মহামেডান। ফলে আন্দ্রে চেরনিশভ মহামেডানকে আইএসএলে কোচিং করাবেন। কলকাতা লিগে সাদা-কালো বিগ্রেডের দায়িত্ব নিয়েছেন উগান্ডার তরুণ কোচ হাকিম সেসেন্ডো। অন্য়দিকে উয়াড়ির দায়িত্বে স্বপন কুমার বিশ্বাস। কলকতারা বাকি দুই প্রধানের মত মহামেডানও জুনিয়র দল এবারের লিগে খেলাচ্ছে।
মহামেডানের তুরুপের তাস ছিল চেন্নাইয়িন এফসি, নেরোকা এফসি-তে খেলা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ফুটবলার। এদিন দুই অর্ধ মিলিয়ে তিনি দুই গোল করলেন। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের পারফরম্য়ান্স ছিল একেবারে চোখ ধাঁধানো। অভিষেকেই বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন তাঁকে মহামেডান সিএফএল ও আইএসএলের জন্য় ভেবেছে। ৩১ মিনিটে তাঁর গোলেই মহামেডান এগিয়ে গিয়েছিল। প্রায় একক কৃতিত্বেই অসাধারণ গোল করেন সজল। বিরতির আগে পর্যন্ত উয়াড়িকে দেখে মনে হয়েছিল যে, তারাও খেলার মধ্য়ে রয়েছে। হয়তো গোল সময়ের অপেক্ষা।
বিরতির পর উড়াড়িকে মাটিতে মিশিয়ে দিল মহামেডান। গোলবন্য়ায় ভাসিয়ে দিল সেসেন্ডোর শিষ্য়রা। উড়াড়ি যদি প্রথমার্ধের সুযোগগুলি কাজে লাগাতে পারত তাহলে হয়তো এতটাও একপেশে ম্য়াচ হত না। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ গোলের শুরু সেই সজলের পা থেকেই ৫৪ মিনিটে তিনি স্কোরলাইন ২-০ করেন। ৬৫ মিনিটে তৃতীয় গোল অ্য়াশলের। ৭৫ মিনিটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন থকচম। ৭৮ ও ৮৫ মিনিটে জোড়া গোল লালথানকিমার। থকচম ও লালথানকিমাকে পরিবর্ত হিসেবে নামিয়েছিলেন সেসেন্ডো। তরুণ কোচের বাজি দারুণ কাজ করে গেল। দুই দলই প্রায় এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্য়ে অনুশীলন করে মাঠে নেমেছিল। তবে মহামেডানের খেলা দেখে মনে হল যে, তারা গতবার যেখানে শেষ করেছিল, ঠিক সেখান থেকেই শুরু করল এবার।