জাদুঘরে সিআইএসএফ জওয়ানের তাণ্ডবের ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসছে। জানা গিয়েছে, পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত সিআইএসএফ জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্র দাবি করেন যে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল। এই আবহে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলেও স্থির করেছিলেন। গতমাসে স্ত্রীকে ফোন করে আত্মহত্যার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন অক্ষয়। ধৃত জওয়ানের দাবি, তাঁকে ইচ্ছে করে অস্ত্রাগারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কঠিন এই দায়িত্ব তাঁর ঘাড়ে চাপিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি সহকর্মীরা ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর ছবিও তুলেছিলেন বলে অভিযোগ অক্ষয়ের।
ইতিমধ্যে অভিযুক্ত সিআইএসএফ জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্রকে ১৪ দিনের পুলিসি হেফাজতে পাঠিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। জানা গিয়েছে ধৃত সিআইএসএফ জওয়ানকে জেরা করছেন পুলিসের কমিশনার বিনীত গোয়েল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মা, ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমার এবং হোমিসাইড শাখার অফিসাররা। তদনন্তে জানা গিয়েছে, অক্ষয় একজন জওয়ানকেও লক্ষ্য করে গুলি চালাতে চেয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এক এএসআই, ইনস্পেক্টর এবং সেই জওয়ান তাঁকে উত্যক্ত করত।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি সিআইএসএফের একাধিক ইউনিট থেকে অমরনাথ যাত্রার ডিউটিতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অক্ষয় সেই ডিউটিতে যেতে বিশেষ রাজি ছিলেন না। মূলত বাবার অসুস্থতার কারণে তিনি যেতে চাননি। তবে কার্যত জোর করেই সেখানে তিনি যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে সূত্রে খবর। এরপর অমরনাথে যাওয়ার পাঁচদিনের মধ্যে বাবার মৃত্যুর খবর পান তিনি। ফিরে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু উপরতলার আধিকারিকের বিরুদ্ধে মনের কোণে জমে থাকা ক্ষোভ কি তখন থেকে আরও বাড়তে থাকে? তবে ইউনিটে তাঁকে নিয়ে নানা মজা করা হত বলে খবর। এনিয়ে তিনি রাগ পুষে রাখতেন বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার ভরসন্ধ্যেবেলা ভারতীয় জাদুঘরে সিআইএসএফের ব্যারাকে একে–৪৭ রাইফেল থেকে পরপর ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। সুবীর ঘোষ যে গাড়িতে ছিলেন, সেই গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন অক্ষয়কুমার মিশ্র। তাঁর ছোড়া গুলিতে রঞ্জিতকুমার সারেঙ্গি নামে অন্য এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের মৃত্যু হয়। জখম হন সুবীর ঘোষও। গুলিতে কাচ ভেঙেছিল পুলিশের গাড়িরও। পরে টানা দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় অক্ষয়কে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।