মাত্র দু’দিন আগে গত মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, সব কাটমানি ফেরত দাও। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাটমানি ফেরতের দাবিতে তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেটাও আবার খোদ অনুব্রত মণ্ডলের জেলা বীরভূমেই।
ফের কাটমানি ফেরতের দাবিতে বৃহস্পতিবার তোলপাড় হয়েছে বোলপুর। এ বার সটান অনুব্রতর গড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আঁচ। বোলপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ২০-২৫ জনের একটি দল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ন’টা পর্যন্ত টাকা ফেরানোর দাবিতে এ দিন বিক্ষোভে সামিল হন।
কিন্তু অভিযোগ কী? কাদের বিরুদ্ধেই বা অভিযোগ?
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্ব। ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বোলপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নরেশ বাউরির বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন দাস বলেন, “এই ওয়ার্ডের তৃনমূল নেতারা আবাসন প্রকল্পে যে বাড়ি দিয়েছেন, তা থেকে ৫-২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরত দিতে হবে তাঁদের। না হলে আবার বিক্ষোভ হবে।”
বুধবার ১৯ জুনও ঠিকই একই অভিযোগ উঠেছিল বীরভূমে। ইলামবাজার থানার শ্রীচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সদস্য উত্তম বাউড়ি এবং বুথ সভাপতি রাজীব আকুরের বাড়ি ঘেরাও করে গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের টাকা লুঠ করেছেন ওই দুই শাসক নেতা। পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়ির দরজায় তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখেন তাঁরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
তৃণমূল সুপ্রিমোর কাটমানি ফেরতের নির্দেশের পর থেকেই তোলপাড় হচ্ছে বিভিন্ন জেলা। তার মধ্যে দু’ দু’বার উঠে এল অনুব্রত মণ্ডলের জেলার নাম। কী বলছেন তিনি?
বোলপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে এ দিন অনুব্রত বলেন, “আমার এলাকায় কারও এসব করার সাহস নেই। আঙুল তুললে হাত কেটে রেখে দেব। এগুলো বিজেপি এবং বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের রটানো খবর। আমার এলাকায় এমন কোনও অভিযোগ নেই।” পাশাপাশি বীরভূমের জেলা সভাপতি আরও বলেন, “বাড়ি বানাতে কেন্দ্র দেড় লাখ টাকা দেয়। আর রাহ্য সরকার দেয় ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। যিনি বাড়ি পান, বেনিফিশিয়ারি হিসেবে তাঁকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়। এই টাকাটাকেই ওরা কাটমানি বলছে। এটা ভুল কথা।”
বুধবার ইলামবাজারের ঘটনাতেও অনুব্রত বলেছিলেন, “এ বাবা এরকম হয়েছে নাকি! আমি তো শুনিনি। দাঁড়ান খোঁজ নিয়ে বলছি”। পরে অনুব্রত বলেন, “এটা বাউড়িপাড়ার ঘটনা। এখানে কিছু সিপিএমের লোকজন আছে। তারাই মদ খেয়ে হাঙ্গামা করেছে।”