সংস্কারের নামে মেডিক্যাল কলেজের ডেভিড হেয়ার ব্লক থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে একের পর এক দরজা-জানলা, এমনটাই অভিযোগ আনলেন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে হেরিটেজ বিল্ডিং থেকে জানলা-দরজা চুরি হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেওয়ালে যেখানে সেখানে প্লাস্টার করায় বিল্ডিং-এর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেছেন, গত ১৫-২০ দিন ধরে চলছে মেডিক্যাল কলেজের ডেভিড হেয়ার ব্লকে সংস্কারের কাজ। প্রথমে বহু পুরনো সব দরজা-জানলা খুলে রাখা হচ্ছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, পরে সেসব আবার লাগিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, সেখানে লোহার গ্রিল বসানো হচ্ছে। চিকিৎসকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, সেই সব দরজা-জানলা কোথায় গেল? এমনকী যেখানে সেখানে প্লাস্টার করার ফলে বিল্ডিং-এর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন চিকিৎসকেরা।
মেডিক্যাল কলেজের ডেভিড হেয়ার ব্লক শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাব। প্রথমে এক সাহেবের নামে এই বিল্ডিং ছিল। পরে ১৯৭৭ সালের পর এই বিল্ডিং-এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ডেভিড হেয়ার ব্লক। এই বিল্ডিং-এর কাঠের দরজা-জানলার গঠনশৈলী ও কারুকার্য দেখার মতো। তাইজন্য এই বিল্ডিংকে হেরিটেজ সাইট তকমা দেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্র পুরস্কারপ্রাপ্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গবেষক তথা ক্যানসার বিশেষজ্ঞ শঙ্কর নাথ বলেন, “এ ভাবে এই হেরিটেজ বিল্ডিং-এর ক্ষতি করে অন্যায় করা হচ্ছে। যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা হয়তো এই বিল্ডিং-এর গুরুত্ব বা দরজা-জানলার মূল্য বোঝেন না। আমাদের সঙ্গে এবং হেরিটেজ কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে কাজ করলে ভালো হতো। এটাকে সঠিকভাবে রক্ষা করা উচিত।”
হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান শুভাপ্রসন্ন বলেন, “প্রথমে দেখতে হবে কোন গ্রেড-এর হেরিটেজ বিল্ডিং এটা। এটা কর্পোরেশনের দেখার কথা। সংস্কার করার জন্য কাজ করা যেতে পারে। তবে ঐতিহ্যটাও বাঁচানো দরকার।” যদিও রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী নির্মল মাজি বলেন, “পিডাবলুডি কাজ করছে। ওরা দায়িত্ব নিয়েই সব কাজ করছে। ওগুলো যত্ন করে খুলে রাখা হয়েছে। আবার লাগিয়ে দেওয়া হবে। অনেক দরজা জানলার কাঠ ঘুন-পোকায় খেয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই এ সব অভিযোগ ঠিক নয়। নিশ্চয় সব দরজা-জানলা আবার লাগানো হবে। খোঁজ নিচ্ছি।”