আজ মহাপ্রাণ বটুকেশ্বর দত্তর ১১১তম জন্মবার্ষিকী ।

স্বাধীন ভারতে নিদারুণ অনটনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন এই বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী বটুকেশ্বর দত্ত । মারা গিয়েছিলেন নিদারুণ দৈন্য দশায় । দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আজীবন উৎসর্গ করে জুটেছে ছিটেফোঁটা স্বীকৃতি । ইতিহাস বইয়ে ঝাপসা হয়ে যায় বটুকেশ্বর দত্তর নাম ।

বর্ধমান জেলার ওয়ারি গ্রামে ১৯১০-এর ১৮ নভেম্বর জন্ম হয়েছিল বটুকেশ্বর দত্তর ।

ছাত্রাবস্থাতেই জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা সংগ্রামে । যোগ দেন Hindustan Socialist Republican Association বা HSRA সংগঠনে । হয় বোমা বানানোর হাতেখড়ি ও প্রশিক্ষণ । আলাপ হল চন্দ্রশেখর আজাদ ও ভগৎ সিং-এর । গ্র্যাজুয়েশনের পরে পুরোমাত্রায় ডুবে গেলেন সশস্ত্র বিপ্লবে ।

স্বাধীন ভারতে নিদারুণ অনটনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন এই বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী বটুকেশ্বর দত্ত । মারা গিয়েছিলেন নিদারুণ দৈন্য দশায় । দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আজীবন উৎসর্গ করে জুটেছে ছিটেফোঁটা স্বীকৃতি । ইতিহাস বইয়ে ঝাপসা হয়ে যায় বটুকেশ্বর দত্তর নাম ।

বর্ধমান জেলার ওয়ারি গ্রামে ১৯১০-এর ১৮ নভেম্বর জন্ম হয়েছিল বটুকেশ্বর দত্তর ।
ছাত্রাবস্থাতেই জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা সংগ্রামে । যোগ দেন Hindustan Socialist Republican Association বা HSRA সংগঠনে । হয় বোমা বানানোর হাতেখড়ি ও প্রশিক্ষণ । আলাপ হল চন্দ্রশেখর আজাদ ও ভগৎ সিং-এর । গ্র্যাজুয়েশনের পরে পুরোমাত্রায় ডুবে গেলেন সশস্ত্র বিপ্লবে ।

এপ্রিল ১৯২৯-এ ব্রিটিশ সরকার শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাবার স্বাধীনতা খর্ব করতে Trade Disputes Bill আর তার সঙ্গে Public Safety Bill ও হিন্দু মহাসভা নেতা লালা লাজপত রাইয়ের পুলিশের লাঠিতে মৃত্যুর বিরোধিতায় বটুকেশ্বর দত্ত প্রস্তাব দিলেন দিল্লিতে Central Legislative Assembly-তে বোমা ছোড়া হোক ।  তাঁর প্রস্তাব গৃহীত হল HSRA-এ । ঠিক হল‚ বোমা নিক্ষেপ করবেন বটুকেশ্বর এবং শুকদেব । পরে পাল্টে যায় পরিকল্পনা । বোমা নিক্ষেপের দায়িত্ব পান ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত ।

১৯২৯-এর ৮ এপ্রিল Central Legislative Assembly-র দর্শকাসন থেকে দুটি বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন তাঁরা । উড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী লিফলেট । ঐ ছোট লিফলেটে লেখা ছিল ,
‘ It takes a loud voice to make the deaf hear — with these immortal , words uttered on a similar occasion by Viliant, A French Anarchist and martyr, do we strongly justify this act of ours.
Let the Government know that while protesting against the Public Safety & the Trade Disputes Bills and the callous murder of Hindu Mahasabha Leader Lala Lajpat Rai , on behalf of the helpless Indian masses, we want to emphasise the lesson often repeated by history that it is easy to kill individuals but you cannot kill ideas. Great Empires crumbled while ideas survive. Bourbons and Czars fell while revolutionaries marched triumphantly ahead.
We are sorry to admit that we, who attach so great a sanctity to human life , we, who dream of a very glorious future, when man will be enjoying perfect peace and full liberty , have been forced to shed human blood . But the sacrifice of individuals at the altar of a great revolution that will bring freedom to all rendering exploitation of man by man impossible, is inevitable . Long Live Revolution.”

কয়েকজন আহত হলেও এই ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়নি । ধরা পড়েন ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত ।গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে – ভগৎ সিং‚ শুকদেব এবং বটুকেশ্বর দত্ত | বিচারে বটুকেশ্বরকে আন্দামানে দ্বীপান্তরে পাঠানো হল Section 307 of the Indian Penal Code আর Section 4 of the Explosive Substances Act ধারায় ।আন্দামান থেকে যখন ফিরে আসেন‚ তখন বটুকেশ্বর দত্ত যক্ষ্মা রোগাক্রান্ত ।  সশস্ত্র আন্দোলন স্তিমিত । তাঁর সাথীরা কেউ আর নেই । তিনি যোগ দিলেন গান্ধীজির ভারত ছাড়ো আন্দোলনে । আবার চার বছরের কারাদণ্ড হল, ছিলেন বিহারের মোতিহারী কারাগারে ।
তবে বহু প্রতীক্ষিত দেশের স্বাধীনতা দেখে যেতে পারলেও বটুকেশ্বর দত্ত স্বাধীন ভারতে আর পা রাখেননি রাজনীতির ত্রিসীমানায় । ১৯৪৭ সালে বিয়ে করেছিলেন । স্ত্রীর নাম অঞ্জলি । একমাত্র মেয়ের নাম রেখেছিলেন ভারতী । দুঃখের কথা হল একমাত্র জনসঙ্ঘ ছাড়া স্বাধীন ভারতে কেউ মনে রাখেনি তাঁর অবদান । বাকি জীবন কেটেছিল দুঃসহ দারিদ্র্যে । সংসার চালাতে করতেন Transport ব্যবসা ।  শেষ দিনগুলো ছিলেন বিহারের পাটনায় । জনসঙ্ঘ তখন খুব ছোট দল , সহায় সংস্থানহীন। তবু যা কিছু পাশে দাঁড়িয়েছিল তা এই দলটিই ।
দীর্ঘ রোগভোগের পরে বটুকেশ্বর দত্ত দিল্লির এইমস-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ১৯৬৫-র ২০ জুলাই । তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুসারে অন্ত্যেষ্টি হয়েছিল পঞ্জাবের ফিরোজপুরের হুসেইনিওয়ালায় ।  যেখানে তার ৩৪ বছর আগে রাতের অন্ধকারে শতদ্রুর জলে গোপনে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর প্রিয় সহযোগী ভগৎ সিং-শিবরাম রাজগুরু-শুকদেব থাপারের অস্থি , লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসি হওয়ার পরে । দিল্লিতে সফদরজং বিমানবন্দরের উল্টোদিকেই আছে তাঁর নামে নামাঙ্কিত বি.কে দত্ত কলোনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.