আজ ১২ ঘন্টার বনধ, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন

শনিবার রাত থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত সন্দেশখালি। রবিবার যা চরম আকার নেয়। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। ১২ ঘন্টার বসিরহাট বনধের ডাক দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, তিন বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় লাগাতার আন্দোলনের ডাক রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের সর্বত্র পালিত হবে কালা দিবস৷ আগামী ১২ই জুন রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে লালবাজার পর্যন্ত সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে অভিযান করবে গেরুয়া শিবির৷

এদিকে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধ ঘিরে সতর্ক পুলিশ প্রশাসন। ঘটনার পর থেকে সন্দেশখালিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ পিকেটিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অন্যদিকে আজ ১২ ঘণ্টার বিজেপির ডাকা বনধে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্যে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। মোতায়েন করা হচ্ছে বাড়তি পুলিশ। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে থাকবে পুলিশ পিকেটিং। জেলা পুলিশের বিশেষ কমব্যাট ফোর্স এবং র‍্যাফকেও তৈরি থাকার নির্দেশ। জোর করে বনধ করতে আসলে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এদিনের বনধ নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জেলা পুলিশের।

প্রসঙ্গত, শনিবার পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। কায়ুম মোল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বিজেপি পাল্টা দাবি করছে, তাদের ৩ জন বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে। এই অবস্থায় রবিবার সন্দেশখালিতে নিহত তিন বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল৷ ঠিক হয় কলকাতায় বিজেপির সদর দফতরে নিহত বিজেপি কর্মীদের শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেই মতো মৃতদেহ নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওয়া দেন বিজেপির নেতারা৷ কিন্তু কলকাতা আসার পথে তিন তিনবার বিজেপি নেতাদের ওই কনভয়কে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়৷ বাসন্তি হাইওয়ের ওপর তাদের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ৷

এই কনভয়ের নেতৃত্বে ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টপাধ্যায়। এরপরেই কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এরপর কোনও রকমে পুলিশি বাঁধা উপেক্ষা করেই শববাহী কনভয় নিয়ে এগিয়ে যান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। কিছুটা এগোতে ফের তাঁদের গাড়ি আটকানো হয়। বিজেপি নেতারা পুলিশকে জানান, সোমবার নিহত কর্মীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বসৎকার করা হবে৷ কিন্তু কে কার কথা শোনে। পুলিশ-বিজেপি সংঘাতে সন্ধে পর্যন্ত রাস্তাতেই মরদেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বিজেপি নেতাদের৷ শেষমেশ ঠিক হয় ফের সন্দেশখালিতে নিহত বিজেপি কর্মীদের মরদেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আর সেখানেই সৎকার হবে৷

আর এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ ১২ ঘণ্টা বসিরহাট বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.