নেত্রীর নির্দেশ ৪২টি আসনের সবকটি দখল করার৷ সেই নির্দেশ মেনে কাজ শুরু করেছেন শীর্ষ নেতারা কিন্তু উলট পুরানের ছবিও রয়েছে৷ যেমন উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার অর্জুন সিং৷ দলত্যাগ করে এই ‘বাহুবলী’ নেতা এখন বিজেপিতে৷ আর পূর্ব বর্ধমান জেলায় একটা বিদ্রোহের বার্তা দিচ্ছেন গুসকরা পুরসভার একাধিক বিদায়ী কাউন্সিলার৷ তাঁরা লোকসভা ভোটের প্রচার থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন। এই ঘটনায় তীব্র আলোড়ন পড়ে গেছে গোটা আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায়।
তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে নিজের জেলা বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডল রীতিমতো সক্রিয়৷ কিন্তু তাঁরই এক অন্যতম এলাকা হল পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা৷ সেখানেই লেগেছে জট৷ গুসকরা পুরসভার এই বিদ্রোহী কাউন্সিলররা নিজেদের অবস্থানেই অনড়৷ তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রচারে নামেননি৷ তাদেরই বেশকয়েকজন জানিয়েছেন, সম্প্রতি গুসকরা কলেজে অনুব্রত মণ্ডল দলীয় কর্মীসভা করেছিলেন। সেখানেও আমাদের ডাকা হয়নি। এমনকি এই ভোট প্রচারেও ডাকা হয়নি। এতে আমরা অপমানিত।
স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অনেকের বক্তব্য, নির্বাচনে প্রচারের জন্য দেওয়ালে দেওয়ালে চুন লাগিয়ে তৈরি হলেও দল তাদের না ডাকায় বিদায়ী কাউন্সিলররা ঘরে বসে রয়েছেন। কয়েকজন কাউন্সিলার জানিয়েছেন, ওই চুন দেওয়া দেওয়ালে তাঁরা কি লিখবেন তা কিছুদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে। একজন কাউন্সিলার জানিয়েছেন, ঘাসফুল ছাগলে খায় আর পদ্মফুলে লক্ষ্মী লাভ হয়। তাই তাঁরা এখন এই বিষয় নিয়েই চিন্তা করছেন।
গুসকরা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলার রাখি মাজি জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে কলেজ মাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে তাঁকে ডাকা হয়নি। দলের একজন কর্মী হিসাবে স্বীকৃতি পাননি তিনি। তাতে তিনি অপমানিত বোধ করেছেন।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল বলেন, যেদিন অনুব্রত মণ্ডল কলেজমাঠে কর্মী সম্মেলন করেছিলেন সেদিন অংশ নেওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে বারবার জিজ্ঞাসা করেছিলেন কর্মী সম্মেলনে যাবেন কিনা। কিন্তু সেদিন তাঁকে বলা হয়েছিল দলের তরফে যাওয়ার কোনও নির্দেশ নেই। তাই তাঁকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। দলের কাছেই এখন অপমানিত হচ্ছেন। তাই বসে রয়েছেন।
গুসকরা পুরসভার তৃণমূলের আর এক বিদায়ী কাউন্সিলর মল্লিকা চোংদার জানিয়েছেন, এক সময় জীবনপাত করে দল করেছেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও দলের হয়ে খেটেছিলেন। এখন দলের কাছে কোনও সন্মান নেই । তাই তিনি এখনও ভোটপ্রচারে নামেননি।
জানা গিয়েছে গুসকরা শহর এলাকায় দেওয়াল লিখনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস থেকে প্রতি ওয়ার্ড পিছু কিছু টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই টাকা ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলরদের কাছে দিতে গেলেও নিতে রাজি হননি বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা। যদিও এব্যাপারে আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার জানিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণই মিডিয়ার প্রচার। সময় এলেই সবাই প্রচারে নামবে সবাই।