রাজ্যের একাধিক স্থান থেকে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের খবর প্রকাশ্যে আসে। কখনও এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে। কখনও টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে। গতকালও কাঁথি থেকে সেই একই খবর প্রকাশ্যে এল। এবার পুজো করাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা বাধে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। পড়ে সেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দেশপ্রাণ ব্লকের পেটুয়া মৎস্যবন্দর এলাকায়। সেই ঘটনায় ৬ জন গুরুতর জখম হন। হামলার ঘটনায় ৩ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কাঁথি পুলিশ জানিয়েছে, পুজো করাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে পুলিশ। সেই মামলায়, রাতভর তদন্ত চালিয়ে পুলিশ বোমাবাজি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন অভিযুক্তকে হাতেনাতে পাকড়াও করে।
জুনপুট উপকূল থানার পুলিশ জানিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার জবেদ শা, এগরা বাসুদেবপুর গ্রামের সাব্বির আলি শা ও জুনপুট উপকূল থানার প্রতাপপুর গ্রামের সঞ্জীব জানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার অভিযুক্তদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লক। সেখানে পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দরে কালী পুজোর অনুমতি দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা বাধে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। দেশপ্রাণ ব্লকের সহ-সভাপতি তরুণ জানা ও গিরি অনুগামীদের মধ্যে এই বচসা এমন জায়গায় পৌঁছায় যে তারা প্রকাশ্যে মারপিটে নেমে পড়ে একে অপরের বিরুদ্ধে। মুহুর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। যদিও শাসকদলের অনুগামীদের দাবি, বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী এই ঘটনার পিছনে রয়েছে।
যদিও, তরুণপন্থীদের অভিযোগ, সমিতির কালীপুজোকে জবর দখল করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু দুষ্কৃতী। তাই প্রতিবাদ মিছিল করে থানায় ডেপুটেশন জমা দিতে যাচ্ছিলেন তরুণ অনুগামীরা। সেই সময়, কাজল রানি নামে এক নেত্রীকে জোর করে বাইক থেকে নামিয়ে কটূক্তি করা হয় বলে অভিযোগ। সামান্য কথাকাটাকাটি থেকে ঝামেলা বেড়ে অন্যদিকে মোড় নেয়। উভয়পক্ষ লাঠি, বাঁশ দিয়ে একে অপরকে মারতে উদ্যত হয়।
গিরি অনুগামীদের পাল্টা অভিযোগ, আলাদা করে ডেপুটেশন জমা কেন দেওয়া হবে এই নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, কিছু দুষ্কৃতী তাঁদের উপর হামলা চালায়। ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। চলে বোমাবাজিও। ঘটনায় আহত হন ৬ জন। তাঁদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তুলকালাম হয়ে উঠেছিল নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চরমে ওঠে অশান্তি। তার জেরে ভাঙচুর করা হয় স্টেশন। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি–মোটরবাইক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। তবে এক পুলিশকর্মীও আহত হয়েছিলেন।