ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কীর্তন গেয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপির এক প্রার্থী। সংকীর্তন ও ভক্তিমূলক গান গেয়ে প্রচার চালানো এই প্রার্থী একজন কীর্তনীয়া। নাম সিদ্ধার্থ নস্কর। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহাসিক স্থান তমলুক থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন তিনি।
সিদ্ধার্থের সঙ্গে আছেন তাঁর ভক্তরা। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য দেবের মতো সিদ্ধার্থ ও তাঁর ভক্তরা এলাকায় সংকীর্তন ও ভক্তিসংগীত গেয়ে চলছেন। কীর্তনের মাঝে সিদ্ধার্থ পা রাখছেন বাড়িতে বাড়িতে। নিচ্ছেন আশীর্বাদ। ভক্তিরসে পুরো এলাকা সিক্ত। পুরাকালে তমলুক ছিল সাগরপাড়ের এক সমুদ্রবন্দর। ভারতের বহু স্বাধীনতাসংগ্রামীর জন্ম এখানে। তমলুকে স্বাধীনতাসংগ্রামীরা একসময় ব্রিটিশ পতাকা সরিয়ে তুলেছিলেন ভারতের স্বাধীন পতাকা। গড়েছিলেন স্বাধীন সরকারও।
তমলুক আসনে এবার জোর লড়াই হচ্ছে। আসনটিতে তৃণমূলের প্রার্থী এলাকার অধিকারী পরিবারের সন্তান দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি বর্তমান সাংসদ। বাম দল প্রার্থী করেছে সিপিএম নেতা ইব্রাহিম আলীকে। কংগ্রেস প্রার্থী করেছে সাবেক সাংসদ ও বিধায়ক লক্ষ্মণ শেঠকে। তিনি একসময় এই এলাকার সিপিএমের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। আসনটিতে এবার চতুর্মুখী লড়াই হতে পারে।
বিজেপির প্রার্থী সিদ্ধার্থ বলেছেন, এবার আর মানুষ অধিকারী পরিবারকে চাইছে না। চাইছে অধিকারী পরিবারের রাজত্ব শেষ করতে। তিনি তাঁর জয়ের ব্যাপারে ২০০ শতাংশ নিশ্চিত।
দিব্যেন্দু বলেছেন, তাঁর জয় নিশ্চিত। তমলুক থেকে জমি অধিগ্রহণবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি এখনো মুছে যায়নি। সঙ্গে আছে মমতার উন্নয়নের জোয়ার। তাই মানুষ এবারও তাঁকেই ভোট দেবেন।
কংগ্রেসের প্রার্থী লক্ষ্মণ একসময় সিপিএমের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী নেতা ছিলেন। ছিলেন সাংসদ, বিধায়ক। ২০১৪ সালে সিপিএম তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। ২০১৬ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১৮ সালে তিনি বিজেপি ছেড়ে যোগ দেন কংগ্রেসে। তিনিও জোর লড়াইয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
সিপিএমের প্রার্থী ইব্রাহিমের এলাকায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। তরুণ এই নেতা বলেছেন, তিনি জয়ের জন্যই মাঠে নেমেছেন। মানুষ এত দিন তৃণমূলের শাসন দেখেছে। দেখেছে তাদের শোষণ আর অত্যাচার। তাই মানুষ বাম দলের দিকে ফিরতে শুরু করেছে।
ইব্রাহিম ২০১৪ সালে এই আসনে তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে লড়ে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে এই আসনে জিতেছিলেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী। দ্বিতীয় হয়েছিলেন সিপিএমের লক্ষ্মণ শেঠ।