১২৪-এ ধারা, রাষ্ট্রদ্রোহের আইনের বৈধতাকে নতুন করে খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট। অ্যাটর্নি জেনারেল কে.কে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আইনকে খারিজ করার বিরোধিতা করেন। খারিজ না করে আইনে কিছু নয়া বিধি নিষেধ সংযোজনের মতামত দেন তিনি। ঐদিন শুনানি চলাকালীন এই আইনকে ‘ঔপনিবেশিক’ বলে আইনের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিমকোর্ট।
প্রসঙ্গত রাজদ্রোহ আইনকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল এস জি ভোম্ববাটকেরে। তাঁর বক্তব্য, এই আইন অস্বচ্ছ এবং বাক্ স্বাধীনতায় বাধা দেয়। স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর এক প্রকার অহেতুক বিধি নিষেধ। তাই এই আইনকে খারিজ করার আর্জি জানান তিনি। তিনি আরও বলেছেন, যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ১৪,১৯ এবং ২১ অনুচ্ছেদে আইনের অসংখ্য পরিবর্তন এসেছে তাই বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই আইনকে নতুন করে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন। মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি এন.ভি. রমণা, বিচারপতি এ.এস. বোপান্না এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।
বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি এন.ভি. রমণা এই আইন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও দেশে ব্রিটিশ আমলের এই আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করে শীর্ষ আদালত। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমন করতে ব্রিটিশ সরকার ১৮৭০ সালে এই আইন লাগু করেছিল। এই আইন প্রয়োগ করা হয়েছিল মহাত্মাগান্ধী বাল গঙ্গাধর তিলকদের প্রতিবাদের আওয়াজ দমন করতে।
বর্তমানে জামিন না পেয়ে বহু মানুষ রাজদ্রোহ আইনে জেল বন্দী। বিচারপতি রমণা উল্লেখ করেছেন, যে রাজদ্রোহ আইনের বাস্তবিক পরিস্থিতি গুরুতর। কোন ব্যাক্তির কণ্ঠরোধ করতে চাইলে প্রশাসন উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ১২৪-এ ধারার প্রয়োগ করছে। এই আইনের অপব্যাবহারের ফলে মানুষ ভীত ও জর্জরিত। ‘এই ভাবে আর কত মানুষ রাজদ্রোহ আইনের অপব্যাবহারের শিকার হবে?’ প্রশ্ন করেন বিচারপতি রমণা।
তিনি বলেন,‘আমাদের চিন্তা এই আইনের অপব্যাবহার নিয়ে। কারণ এর দায়বদ্ধতা নেই। এর অপব্যবহার করার মত প্রচুর ক্ষমতা রয়েছে যা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির কাজকর্মে বাধা দেবে’। তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৬-এ ধারা রদ হওয়ার উদাহরণ তুলে রাজদ্রোহ আইনের অপব্যবহার রুখতে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন তিনি। এই মামলায় কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে আদালত। কেন্দ্র এই বিষয়ে কি প্রতিক্রিয়া জানায় এখন তারই অপেক্ষা।