#Breaking: বেপরোয়া ঘাতক জাগুয়ার: আরসালান মালিকের ছেলে গ্রেফতার

প্রবল বৃষ্টির মধ্যে রাতের কলকাতায় প্রথমে মার্সিডিজ ও পরে পুলিশ কিয়স্কে ধাক্কা মারে বেপরোয়া জাগুয়ার। তারপর পিষে দেয় দুই বাংলাদেশি নাগরিককে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। গাড়ি ছেড়ে পালালেও ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশ গ্রেফতার করল ঘাতক গাড়ির চালক আরসালান পারভেজকে। পারভেজ কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানি চেন আরসালানের মালিকের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ২২ বছরের আরসালান পারভেজ লন্ডনের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। কয়েকদিনের ছুটিতে সে বাড়ি এসেছিল। শুক্রবার রাতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিল আরসালান। তারপরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, পারভেজকে গ্রেফতার করার পরে তার বিরুদ্ধে মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্টের একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলা দায়ের করা হয়েছে বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকেও।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার গভীর রাত ১টা ৫০ নাগাদ। পুলিশ সূত্রে খবর, বিড়লা তারামণ্ডল থেকে কলামন্দিরের দিকে যাচ্ছিল ঘাতক জাগুয়ারটি। অন্যদিকে তখন পার্ক স্ট্রিট থেকে মিন্টো পার্কের দিকে যাচ্ছিল একটি মার্সিডিজ গাড়ি। লাউডন স্ট্রিট ও শেক্সপিয়ার সরণির সংযোগস্থলে প্রথমে প্রবল গতিতে এসে জাগুয়ারটি ধাক্কা মারে মার্সিডিজে।

এই ধাক্কায় মার্সিডিজের চালক ও আরোহী আহত হন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে এয়ার ব্যাগ থাকায় বেঁচে যান তাঁরা। দুটি গাড়িরই এয়ার ব্যাগ খুলে যায়। তবে মার্সিডিজে ধাক্কা মেরেই থেমে যায়নি জাগুয়ার। পুলিশ জানিয়েছে, তার গতি এতই বেশি ছিল যে তারপর পাশের পুলিশ কিয়স্কে ধাক্কা মারে সেটি। ধাক্কার জেরে কিয়স্কটি হেলে যায় পাশে। ভাগ্যক্রমে সেই সময় সেখানে কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না। সেই কিয়স্কের পাশেই বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে তিনজন দাঁড়িয়েছিলেন বলে খবর। তাঁদেরও পিষে দেয় জাগুয়ার।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে আসেন শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ। তাঁরা তিন পথচারী ও মার্সিডিজের দুই আরোহীকে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যান এসএসকেএম-এ। সেখানে ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তৃতীয় ব্যক্তি ও মার্সিডিজের দুই ব্যক্তি এসএসকেএম-এ ভর্তি রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দু’জনের নাম কাজি মহম্মদ মইনুল আলম ( ৩৬ ) ও ফারহানা ইসলাম তানিয়া ( ২৮ )। দু’জনেই বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।

বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের কর্তা মহম্মদ বসিরুদ্দিন জানান, “আমাদের দেশের দুই নাগরিক মারা গিয়েছেন। পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়ম মেনে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে দেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। রাতে হোটেলে ফেরার সময় বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে কিয়স্কের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। তখনই এই ঘটনা ঘটে। আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি।”

দুর্ঘটনার পর পারভেজ পালিয়ে গেলেও আরটিও থেকে গাড়ির মালিকের খোঁজ পায় পুলিশ। ডিসি সাউথ মিরাজ খালিদ জানান, গাড়ির মালিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরেই গ্রেফতার করা হয় আরসালান পারভেজকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.